বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে পাতানো ম্যাচ খেলার অভিযোগে নয়জনকে অভিযুক্ত করেছে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ (আকসু)। এই নয়জনই বিপিএলের দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের খেলোয়াড়, কোচ এবং কর্মকর্তা। এদের মধ্যে তিনজন স্থানীয় ও দুজন বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছে। বাকি চারজনের তিনজন দলের কর্মকর্তা এবং একজন কোচ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এদের চূড়ান্ত সাজা নির্ধারণ করবে। দুই-তিন দিনের মধ্যেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযুক্তরা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ পাবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আইসিসি ও বিসিবি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আকসুর রিপোর্ট প্রকাশ করে। তবে বিসিবির দুর্নীতি দমন আইনের কারণে এই সম্মেলনে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। বিসিবির ঘনিষ্ঠ সূত্রে অভিযুক্ত নয়জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশাররফ হোসেন রুবেল, মাহবুবুল আলম রবিন, ড্যারেন স্টিভেন্স, কৌশল্য লুকুয়ারাচ্চি, কোচ মোহাম্মদ রফিক, সিইও গৌরব রাওয়াত, চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিহাব চৌধুরী।
এ রিপোর্ট প্রকাশ করা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। আকসুর তদন্ত রিপোর্টে কী আছে, কে বা কারা অভিযুক্ত হচ্ছেন, অভিযুক্তদের সাজা কী হবে ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। যদিও আইসিসি ও বিসিবির গতকালের সংবাদ সম্মেলনের দিকে মুখিয়ে ছিল গোটা দেশই। এমনকি ক্রিকেট বিশ্বও। কিন্তু আকসু সরাসরি কোনো শাস্তি ঘোষণা না করায় বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারির সমাপ্তি ঘটছে না এখনই। আকসু তদন্ত শেষ করেছে। তবে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ইতি ঘটবে বলে বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের ক্রিকেটে টিকে থাকবে আরও কয়েক মাস। অনেক জল্পনাকল্পনার পর গতকাল আকসুর তদন্তের প্রাপ্তি সম্পর্কে জানিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে সরাসরি ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দুজন ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও আকসুকে জানানোর দায়িত্ব পালন করেননি বলে অভিযুক্ত হয়েছেন। ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকা সাতজনকেই সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি ও বিসিবি। অভিযুক্ত নয়জনকেই তাদের অপরাধের বৃত্তান্ত জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আইসিসি। বিপিএল চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সও জড়িত বলে জানিয়েছে আইসিসি। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সবাই নির্দোষই থাকবেন।
মোহাম্মদ আশরাফুল নিজের অপরাধ স্বীকার করলেও বাকি কেউই দোষ স্বীকার করেননি। বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী আইন অনুযায়ী, অভিযুক্ত কারোরই নাম প্রকাশ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত যদি কেউ নির্দোষ প্রমাণ হন তাই সবার নাম গোপন রেখেছে আইসিসি ও বিসিবি। আকসুর তদন্ত কার্যক্রম দিয়েই বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারির ইতি ঘটছে না। কারণ আকসুর তদন্তের পর এখন বিসিবি একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে। যে ট্রাইব্যুনাল চূড়ান্তভাবে অভিযুক্তদের শাস্তি দেবে। তার আগে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ পর্যালোচনা, অভিযুক্তদের বক্তব্য, তথ্য, প্রমাণাদি সবই পরীক্ষা করে দেখবে। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিপক্ষে আপিল করবেন বা অপরাধ স্বীকার করে নেয়ার জন্য ১৪ দিন সময় পাবেন। শেষ পর্যন্ত যারা অভিযুক্ত হবেন তাদের জন্য শাস্তির মাত্রাও ঠিক করে দিয়েছে আইসিসি। যারা ফিক্সিংয়ে সরাসরি জড়িত তারা আজীবন বা কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হবেন। বাকিদের এক থেকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হতে পারে। যদিও সব ধরনের শাস্তিই দেবে বিসিবির গঠিত ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে ১০ সদস্য থাকবেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে নিয়ে মূল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে। ২-৩ দিনের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন তদন্ত শেষ করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তদন্তে বিসিবির আন্তরিক সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিকরা নানাভাবে প্রশ্ন করলেও অভিযুক্ত নয়জনের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান ডেভ রিচার্ডসন। জানিয়েছেন, ‘বিসিবির দুর্নীতি দমন কোড অনুযায়ী নাম বলা যাবে না। এ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারো নাম বলা ঠিক হবে না। এখনও তারা দোষী নয়। এখন নাম বলে দিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তারা দোষী না হয়।’ ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সও জড়িত বলে জানান তিনি। বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট করে বলেননি। থাকলেও তাদের শাস্তি বিসিবির দুর্নীতি দমন আইনেই হবে বলে জানান আইসিসির প্রধান নির্বাহী। আকসুর কাছে স্বীকারোক্তি দেয়া আশরাফুলের শাস্তি কমানোর বিষয়টিও ট্রাইব্যুনালই বিবেচনা করবে বলে জানান ডেভ রিচার্ডসন।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমি সবার মতোই হতাশ, ব্যথিত। কেউ কেউ আমাদের প্রিয় খেলোয়াড়, কর্মকর্তা। প্রিয় কেউ বিশ্বাস ভঙ্গ করলে মানা কঠিন। তবে আমি খুশি যে, আমরা বিষয়টি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি। এখনই না করলে দুর্নীতি থামানো কঠিন হতো। আকসু দারুণ কাজ করেছে। এটা দেশের বাকি সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে বলে আশা করি।’ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আজ (কাল) সকালে আকসুর রিপোর্ট দেখেছি। আমি জানি কিন্তু কারো নামই বলতে পারব না আইনের কারণে। যথাসময়েই আপনারা সবার নাম জানতে পারবেন।’ যেভাবে শুরু পাতানো ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চিটাগং কিংসের কাছে যখন অনায়াসেই হেরে যায় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটির ৫৪ রানের পরাজয়ের পর ম্যাচটি পাতানো ছিল সন্দেহে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। চিটাগং কিংস ১৪২ রান করেছিল। জবাবে আশরাফুলের নেতৃত্বে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঢাকা ৮ উইকেটে মাত্র ৮৮ রান করতে সমর্থ হয়। আশরাফুল স্বভাববিরুদ্ধ ৪৮ বলে ৩৩ রান করেন। সেই ম্যাচে ফিট থাকা সত্ত্বেও একাদশে রাখা হয়নি নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। যার ফলে সন্দেহ আরও তীব্র আকার পায়। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি আবার মিরপুরে বরিশাল বার্নার্সের বিপক্ষে চিত্রনাট্যের ম্যাচ খেলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। এ ম্যাচেও অধিনায়ক ছিলেন আশরাফুল। মাশরাফি না থাকলেও ছিলেন সাকিব। ১৯.২ ওভারে ১১৪ রান করতে সমর্থ হয় ঢাকা। দিলশান-আশরাফুলের ওপেনিং জুটিতে ধীরগতির শুরু পায় ঢাকা। দিলশান ৩৫, আশরাফুল ২০ রান করেন। এর মধ্যে সাকিবের রান আউটে বড় ভূমিকা ছিল আশরাফুলের। ড্রেসিংরুমে ফিরে সাকিবই নাকি চিত্কার করে আশরাফুলকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, এটা পুরো ফিক্সিং। মোশাররফ হোসেন রুবেলদের উদারহস্ত বোলিংয়ে ১৩.৩ ওভারেই ১১৭ রান করে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে বরিশাল বার্নার্স। এর বাইরে কয়টি ম্যাচ সন্দেহের তালিকায় আছে তা জানাতে রাজি হয়নি আইসিসি ও বিসিবি কর্তারা। বিপিএল শেষ হওয়ার এক মাস পরই আকসু কর্মকর্তার সন্দেহজনক ম্যাচের তালিকা তুলে দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের হাতে। তদন্ত করতে সম্মতি দেন নাজমুল হাসানও। তারপরই বাংলাদেশ ও বাইরে বিভিন্ন ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, কোচদের জেরা করে আকসু কর্মকর্তারা। এর মধ্যে আশরাফুলই নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন।
এ রিপোর্ট প্রকাশ করা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। আকসুর তদন্ত রিপোর্টে কী আছে, কে বা কারা অভিযুক্ত হচ্ছেন, অভিযুক্তদের সাজা কী হবে ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। যদিও আইসিসি ও বিসিবির গতকালের সংবাদ সম্মেলনের দিকে মুখিয়ে ছিল গোটা দেশই। এমনকি ক্রিকেট বিশ্বও। কিন্তু আকসু সরাসরি কোনো শাস্তি ঘোষণা না করায় বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারির সমাপ্তি ঘটছে না এখনই। আকসু তদন্ত শেষ করেছে। তবে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ইতি ঘটবে বলে বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের ক্রিকেটে টিকে থাকবে আরও কয়েক মাস। অনেক জল্পনাকল্পনার পর গতকাল আকসুর তদন্তের প্রাপ্তি সম্পর্কে জানিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে সরাসরি ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দুজন ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও আকসুকে জানানোর দায়িত্ব পালন করেননি বলে অভিযুক্ত হয়েছেন। ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকা সাতজনকেই সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি ও বিসিবি। অভিযুক্ত নয়জনকেই তাদের অপরাধের বৃত্তান্ত জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আইসিসি। বিপিএল চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সও জড়িত বলে জানিয়েছে আইসিসি। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সবাই নির্দোষই থাকবেন।
মোহাম্মদ আশরাফুল নিজের অপরাধ স্বীকার করলেও বাকি কেউই দোষ স্বীকার করেননি। বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী আইন অনুযায়ী, অভিযুক্ত কারোরই নাম প্রকাশ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত যদি কেউ নির্দোষ প্রমাণ হন তাই সবার নাম গোপন রেখেছে আইসিসি ও বিসিবি। আকসুর তদন্ত কার্যক্রম দিয়েই বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারির ইতি ঘটছে না। কারণ আকসুর তদন্তের পর এখন বিসিবি একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে। যে ট্রাইব্যুনাল চূড়ান্তভাবে অভিযুক্তদের শাস্তি দেবে। তার আগে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ পর্যালোচনা, অভিযুক্তদের বক্তব্য, তথ্য, প্রমাণাদি সবই পরীক্ষা করে দেখবে। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিপক্ষে আপিল করবেন বা অপরাধ স্বীকার করে নেয়ার জন্য ১৪ দিন সময় পাবেন। শেষ পর্যন্ত যারা অভিযুক্ত হবেন তাদের জন্য শাস্তির মাত্রাও ঠিক করে দিয়েছে আইসিসি। যারা ফিক্সিংয়ে সরাসরি জড়িত তারা আজীবন বা কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হবেন। বাকিদের এক থেকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হতে পারে। যদিও সব ধরনের শাস্তিই দেবে বিসিবির গঠিত ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে ১০ সদস্য থাকবেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে নিয়ে মূল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে। ২-৩ দিনের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন তদন্ত শেষ করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তদন্তে বিসিবির আন্তরিক সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিকরা নানাভাবে প্রশ্ন করলেও অভিযুক্ত নয়জনের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান ডেভ রিচার্ডসন। জানিয়েছেন, ‘বিসিবির দুর্নীতি দমন কোড অনুযায়ী নাম বলা যাবে না। এ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারো নাম বলা ঠিক হবে না। এখনও তারা দোষী নয়। এখন নাম বলে দিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তারা দোষী না হয়।’ ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সও জড়িত বলে জানান তিনি। বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট করে বলেননি। থাকলেও তাদের শাস্তি বিসিবির দুর্নীতি দমন আইনেই হবে বলে জানান আইসিসির প্রধান নির্বাহী। আকসুর কাছে স্বীকারোক্তি দেয়া আশরাফুলের শাস্তি কমানোর বিষয়টিও ট্রাইব্যুনালই বিবেচনা করবে বলে জানান ডেভ রিচার্ডসন।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমি সবার মতোই হতাশ, ব্যথিত। কেউ কেউ আমাদের প্রিয় খেলোয়াড়, কর্মকর্তা। প্রিয় কেউ বিশ্বাস ভঙ্গ করলে মানা কঠিন। তবে আমি খুশি যে, আমরা বিষয়টি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি। এখনই না করলে দুর্নীতি থামানো কঠিন হতো। আকসু দারুণ কাজ করেছে। এটা দেশের বাকি সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে বলে আশা করি।’ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আজ (কাল) সকালে আকসুর রিপোর্ট দেখেছি। আমি জানি কিন্তু কারো নামই বলতে পারব না আইনের কারণে। যথাসময়েই আপনারা সবার নাম জানতে পারবেন।’ যেভাবে শুরু পাতানো ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চিটাগং কিংসের কাছে যখন অনায়াসেই হেরে যায় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটির ৫৪ রানের পরাজয়ের পর ম্যাচটি পাতানো ছিল সন্দেহে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। চিটাগং কিংস ১৪২ রান করেছিল। জবাবে আশরাফুলের নেতৃত্বে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঢাকা ৮ উইকেটে মাত্র ৮৮ রান করতে সমর্থ হয়। আশরাফুল স্বভাববিরুদ্ধ ৪৮ বলে ৩৩ রান করেন। সেই ম্যাচে ফিট থাকা সত্ত্বেও একাদশে রাখা হয়নি নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। যার ফলে সন্দেহ আরও তীব্র আকার পায়। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি আবার মিরপুরে বরিশাল বার্নার্সের বিপক্ষে চিত্রনাট্যের ম্যাচ খেলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। এ ম্যাচেও অধিনায়ক ছিলেন আশরাফুল। মাশরাফি না থাকলেও ছিলেন সাকিব। ১৯.২ ওভারে ১১৪ রান করতে সমর্থ হয় ঢাকা। দিলশান-আশরাফুলের ওপেনিং জুটিতে ধীরগতির শুরু পায় ঢাকা। দিলশান ৩৫, আশরাফুল ২০ রান করেন। এর মধ্যে সাকিবের রান আউটে বড় ভূমিকা ছিল আশরাফুলের। ড্রেসিংরুমে ফিরে সাকিবই নাকি চিত্কার করে আশরাফুলকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, এটা পুরো ফিক্সিং। মোশাররফ হোসেন রুবেলদের উদারহস্ত বোলিংয়ে ১৩.৩ ওভারেই ১১৭ রান করে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে বরিশাল বার্নার্স। এর বাইরে কয়টি ম্যাচ সন্দেহের তালিকায় আছে তা জানাতে রাজি হয়নি আইসিসি ও বিসিবি কর্তারা। বিপিএল শেষ হওয়ার এক মাস পরই আকসু কর্মকর্তার সন্দেহজনক ম্যাচের তালিকা তুলে দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের হাতে। তদন্ত করতে সম্মতি দেন নাজমুল হাসানও। তারপরই বাংলাদেশ ও বাইরে বিভিন্ন ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, কোচদের জেরা করে আকসু কর্মকর্তারা। এর মধ্যে আশরাফুলই নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন।
COMMENTS