শান্তি চাইলে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে আগামী নির্বাচন আবারও সংবিধান মোতাবেক হবে উল্লেখ করে প্রধামন্ত্রী স্বাধীনভাবে সবাইকে ভোট দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
প্রধামন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষকে শান্তি দিতে পারবে না। যদি শান্তি চান, উন্নয়ন চান, জঙ্গিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চান তাহলে আওয়ামীলীগের পতাকাতলে আসুন। নৌকা মার্কায় যাকে প্রার্থী দেবো তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।’
এসময় তিনি হাত তুলে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ওয়াদা করার আহ্বান জানালে উপস্থিত জনগণ তাতে সাড়া দেন।
প্রধামন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষকে শান্তি দিতে পারবে না। যদি শান্তি চান, উন্নয়ন চান, জঙ্গিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চান তাহলে আওয়ামীলীগের পতাকাতলে আসুন। নৌকা মার্কায় যাকে প্রার্থী দেবো তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।’
এসময় তিনি হাত তুলে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ওয়াদা করার আহ্বান জানালে উপস্থিত জনগণ তাতে সাড়া দেন।
তিনি বলেন, ‘আরেকটিবার সেবা করার সুযোগ দিন। নৌকা মার্কায় ভোট দিন। রাজাকার, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের আবারও সুযোগ দিন।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি জনসভা মঞ্চে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি- জামায়াত হত্যা, নির্যাতন ছাড়া দেশবাসীকে কিছুই দিতে পারেনি। বিএনপি আমলে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারেনি। একাত্তরে পাকিস্তানীরা ও তাদের দোসররা যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছিল ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে একইভাবে হত্যা-নির্যাতন চালিয়েছে।’
কোকোর টাকা বিদেশ থেকে ফেরত আনার বিষয়ে বিরোধীদল এটিকে ‘নাটক’ বলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আনা কি নাটক হতে পারে? বিএনপি নেত্রী ছেলের দুর্নীতির টাকা যাতে ফেরত আনা না যায় সেই জন্যে তিনি দু’বার সিংগাপুর গিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন। কিন্তু সিংগাপুর সরকার তার কথা শুনেনি। তারা টাকা ফেরত পাঠিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর মাত্র সাড়ে চার বছরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়েছি। কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। সারের দাম কমিয়েছি। ১০ টাকায় কৃষকদের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতা হত্যাকান্ডের মামলার রায় কার্যকর করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি। রায় দেয়া শুরু হয়েছে। ইনশাল্লাহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই।’
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য বিএনপি-জামায়াত ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাদের প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
গত ৫ মে ঢাকায় হেফাজতের তান্ডবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে দোকানে আগুন দিয়ে কোরআন শরীফ পোড়ানো হয়েছে। জায়নামাজ পোড়ানো হয়েছে। মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন,আপনারা কিভাবে ইসলামের হেফাজত করবেন? কোরআন শরীফ পোড়ানো কোন ধরনের রাজনীতি?’
তিনি বলেন, ‘ইসলামের হেফাজত শুধুমাত্র আওয়ামীলীগই করে। এরপরও আওয়ামীলীগের নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়। যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে। এটাই আওয়ামীলীগের নীতি।’
শিক্ষার উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট করেছি। ১ লাখ ৩২ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়েছি। ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি দিয়েছি। দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে স্টেডিয়াম করার উদ্যোগ নিয়েছি। জনসভার মাঠটিকেও স্টেডিয়াম করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘আগে ঘরবাড়ি বিক্রি করে মানুষ বিদেশ যেতো, এখন মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় মানুষ বিদেশ যেতে পারছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়েও মানুষ বিদেশ যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। পঁচাত্তরে আমি মা-বাবা ভাইসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। জনগনের মাঝেই আমি আমার মা-বাবাকে খুঁজে পাই। আমি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আপনারা আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিন। ইনশাল্লাহ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত দেশে পরিণত হবে। বিশ্ব সভায় মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল পদ্ধতিতে ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এসব প্রকল্পের মধ্যে আছে, নগরীর হালিশহরে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৯১টি খাদ্য গুদাম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবনির্মিত পাঁচতলা বিশিষ্ট ডেন্টাল ভবন, চট্টগ্রাম কলেজের নতুন প্রশাসনিক ভবন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বহি:বিভাগ ভবন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ভবন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল, চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, লোহাগাড়া উপজেলা ট্রমা সেন্টার, ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন, রফিকুল আনোয়ার-মোরশেদা ট্রাস্ট, সিডিএ স্কয়ার (আবাসিক) ফ্ল্যাট প্রকল্প।
ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগ নেতা ইছহাক মিঞা, জাতীয় পার্টির সাংসদ ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভাপতি সাংসদ মঈনউদ্দিন খান বাদল, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, সাংসদ আবুল কাশেম মাস্টার, চেমন আরা তৈয়ব, শাহিদা তারেক দীপ্তি, হাসিনা মান্নান, কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন আহমদ, ফটিকছড়ির সাবেক সাংসদ প্রয়াত রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুল হায়দার রোটন বক্তব্য রাখেন।
COMMENTS