রাজীব সরকারঃ গাজীপুরের অলি-গলি, গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা-ঘাটে হাত বাড়ালেই সহজেই পাওয়া যায় যে কোন ধরণের মাদক। এতে এলাকাবাসির মধ্যে বিরাজ করছে ভয় ও আতঙ্ক। কবে যেন তাদের সন্তানও আসক্ত হয়ে পড়ে মাদকের নেশায়। এরকম অশান্তি ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ জন। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে বেশি মাদকাসক্ত হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বেকার যুবক-যুবতীও। এতে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন বয়সেরে নারী ও পুরুষ। মাদকের টাকা যোগারের জন্য চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে এখানকার মানুষ। মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে গেলেও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কিংবা পুলিশের কোন মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। ফলে বর্তমানে ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাঁজা ও হিরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য গাজীপুরে সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় গাজীপুরে এখন মাদক ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকায় আস্তানায় তৈরি করে প্রতিদিন গড়ে লাখ লাখ টাকার মাদক বিক্রয় করছে। মজুদ করে রেখেছে হেরোইন, ইয়াবা, গাজা ও হাজার হাজার বোতল ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। এসব মাদকদ্রব্য গ্রাম পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে আসছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এতে করে মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে ফেন্সিডিল, ইয়াবা, হেরোইন ও গাজা ব্যবসা করে গড়ে তোলছে টাকার পাহাড়। অপর দিকে এসব আস্তানা থেকে মাদকদ্রব্য বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে পৌছে দিতে সহযোগিতার জন্য পুলিশ হাতিয়ে নিচ্ছে মাসোয়ারা হিসেবে লাখ লাখ টাকা। ফলে মাদক ব্যবসা বন্ধ তো হচ্ছেই না, সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলা শহরসহ গ্রাম-গঞ্জে। এরকম প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও সেবনের কারণে গ্রামের উঠতি যুবক ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মাদক সেবনে অভ্যন্ত হয়ে পড়ছে। মাদকের টাকা জোগার করতে তারা বেছে নিয়েছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাজ। মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের অবাধ বিচরণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্কুল-কলেজে পড়ুয়া মেয়েরা ঘর থেকে বের হলেই মাদকাসক্তদের অশ্লীল ইঙ্গিতসহ উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে। এসবের ভয়ে অনেক মেয়ে স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
তাছাড়া যেসব পরিবারে লোকজন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে, সেসব পরিবারে সুখ নেই বললেই চলা। সংসারে মারামারি হানাহানিসহ নানা অশান্তি লেগেই রয়েছে। এসব কিছুর জন্য দায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ তারা যদি তৎপরতার সাথে কাজ করতো তাহলে হয়তো এভাবে মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে পড়তো না। মাদকাসক্তরাও মাদকদ্রব্যের দিকে জোকে পড়তে পাড়তো না।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, গাজীপুর সদর, কালিযাকৈর, টঙ্গী, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, কালিগঞ্জসহ মাদক দ্রব্য বিক্রয় হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেও। দিনের বেলায়ও পুলিশের নাকের ডগার উপর এসব মাদক দ্রব্য বিক্রি হলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ নীরব ভুমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
এছাড়া বিভিন্ন মুদি দোকানেও ইদানিং হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ফেন্সিডিল গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। গাজীপুরের সব কয়টি উপজেলায় সর্বত্রই মদ, ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলে ছেয়ে গেলেও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কিংবা পুলিশের কোন মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা মাঝে মধ্যে আইওয়াশের জন্য দুই-তিন বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করলেও বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে ধঁরাছোয়ার বাইরে। মাদক বিক্রি বন্ধের জন্য থানায় একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী জানান, থানা পুলিশকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে এ ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে আসছি। তাই পুলিশ আমাদের কিছু বলে না। তবে যখন মাসোহারা কম হয় বা দিতে না পারি তখন আমরা আতংকে থাকি। কারণ অনেক সময় পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে যায়, সে সময় ছাড়িয়ে আনতে বেশি খরচ হয় বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা ওয়ান নিউজ বিডি’কে বলেন, উপজেলার সর্বত্র এসব মাদক দ্রব্য সহজে পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া কিছু পুলিশ মাসোহারা গ্রহণের ফলে শুধু রাতের বেলায় নয় দিনে-দুপুরেও যেখানে সেখানে বসেই মাদক ব্যবসা করছে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মাদকসহ ব্যবসায়ীদের ধরে গাজীপুর কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হলেও দেখা যাচ্ছে কয়দিন পর জামিনে বের হয়ে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করছে। এসব কারণে মাদক দ্রব্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, কালিযাকৈর উপজেলার কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন প্রায় সাত লাখ টাকার মাদক বেচা-কিনা হয়। মাদকদ্রব্য সহজলভ্যতার কারণে কালিয়াকৈর উপজেলা এখন মাদকের পাইকারী স্পর্ট হিসেবে গড়ে উঠেছে।
গাজীপুর জেলা মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক দেওয়ান মো: জিল্লুর রহমান এব্যপারে বলেন, পুরো জেলায় মাত্র ৬ জন লোক কাজ করি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রেণে আমরার সব সময় কাজ করছি তাছাড়া ঐশীর বাবা-মা হত্যা কান্ডের ঘটনার পর থেকে উপর মহলের নির্দেশে আরো বেশী ততপর এখন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রেণ অধিদপ্তর। গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বক্স বসানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন মাদকের বিষয়ে আমাদের তথ্য দিলে আমরা অভিযান চালাই। গাজীপুরে মামলার সংখ্যাও বেড়েছে আগের চেয়ে ৩ গুন বেশী।
- dearJulius.com
- AllBangladeshiNewspaper.com
- BanglaNewspaper24.com
- BanglaNewspapers24.com
- BestLifeInsider.com
- Currents360.com
- DailyNews.US.com
- DailyNewsView.com
- JobsPlugins.com
- ListOfURL.com
- LiveNewspapers24.com
- LocalPlugins.com
- MediaHomepages.com
- NewspapersHomepage.com
- PRLinked.com
- SocioPages.com
- w3Finder.com
- w3Homepage.com
- w3Local.com
- WomensZine.com
COMMENTS