রাজীব সরকারঃ গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আট হাজার টাকা নূন্যতম মজুরির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে। এছাড়া তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং কোনাবাড়ীর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। এসময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
এতে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এতে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানো গ্যাস ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সকাল ১০ টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিক পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে।
অপরদিকে চৌরাস্তা বাইপাস এলাকায় সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাজীপুরের চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী, বাইপাস, সফিপুর, মৌচাক, মনিপুর, চন্দ্রা এলাকায় শ্রমিরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করে।
জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, বোর্ড বাজার, বড়বাড়ি, তেলিপাড়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা সকালে সড়কে নেমে আসে এবং মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে যোগ দিতে থাকে।
টঙ্গীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গীর সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা ঢাকা ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে।
তিনি জানান, আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।
এদিকে আট হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে রোববারও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে পোশাক শ্রমিকরা। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্যদিকে শনিবার ঢাকার শ্রমিক সমাবেশে যোগ দিতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ এনে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে পোশাক শ্রমিকরা। অসন্তোষের কারণে গাজীপুর বোর্ড বাজারসহ আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক কারখানায় ওই দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়।
চলতি বছরের মে মাসে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার।
পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ন্যূনতম বেতন তিন হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। তবে এ শিল্পের শ্রমিক সংগঠনগুলো আট হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।
এদিকে সঙ্কট নিরসনে সরকারের মজুরি বোর্ড ইতোমধ্যে উভয়পক্ষকে নিয়ে কয়েকটি বৈঠক করেছে। তবে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
অন্যদিকে পোশাক খাতে অস্থিতিশীলতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রোববার এক বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে দ্রুত একটি ‘ন্যায্য’ মজুরি কাঠামো ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “পোশাক শিল্প ও শ্রমিকদের বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে একটি ন্যায্য মজুরি কাঠামোর প্রতি এফবিসিসিআই পূর্ণ সমর্থন করে। কেননা শ্রমিকরাই উৎপাদনের মূল কারিগর।”
COMMENTS