মোবাইল ব্যাংকিংয়ে জালিয়াতি ঠেকাতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠাতে গ্রাহকের নিজের হিসাব থাকার বিধান কড়াকড়ি অনুসরণের নির্দেশ রয়েছে এতে।
এই নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই এক এজেন্টের মোবাইল হিসাব থেকে অন্য এজেন্টের হিসাবে টাকা পাঠানো যাবে না। কোনো এজেন্ট এই নির্দেশনা অমান্য করে লেনদেন করলে তাৎক্ষণিকভাবে তার এজেন্টশিপ বাতিল করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকাল রোববার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। এর আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক আলোচনা করেছে।
নতুন নির্দেশনায় নিজের মোবাইল হিসাবে টাকা জমা ও অন্য হিসাবে টাকা স্থানান্তরসহ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা রয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের নীতিমালার আলোকে গ্রাহকের পূর্ণ পরিচিতি (কেওয়াইসি) নিয়ে মোবাইল হিসাব খুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে হিসাব খোলার ফরমে গ্রাহকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি, পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি, মোবাইল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোনো ধরনের লেনদেন করা হবে, গ্রাহকের পেশা ও ব্যাংক হিসাব থাকলে তা উল্লেখ করতে হবে।
একই সঙ্গে হিসাব খোলার ফরমে একজন শনাক্তকারীর স্বাক্ষর থাকতে হবে। গ্রাহকের কেওয়াইসি ফরম ব্যাংক থেকে যাচাই না করা পর্যন্ত ওই হিসাবে শুধু অর্থ জমা ছাড়া আর কোনো লেনদেন করা যাবে না। ফরম যাচাইয়ের শর্তটি আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
নির্দেশনা অনুসারে একজন এজেন্ট অন্য এজেন্টের হিসাবে টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন না। আর গ্রাহকের মোবাইল হিসাব থাকার বিষয়টি এজেন্টকে নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় লেনদেন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের এজেন্টশিপ বাতিল করতে হবে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকেরও নজরদারিতে থাকবে।
এজেন্ট নিজের এজেন্ট হিসাবে দৈনিক পাঁচবারের বেশি নগদ অর্থ জমা দিতে পারবে না। আর একজন গ্রাহক তাঁর মোবাইল হিসাবে দৈনিক সর্বোচ্চ পাঁচবার ও মাসে ২০ বার জমা দিতে পারবেন এবং দিনে সর্বোচ্চ তিনবার ও মাসে ১০ বার উত্তোলন করতে পারবেন। তবে কোনো অবস্থাতেই জমা ও উত্তোলনের পরিমাণ (উভয় ক্ষেত্রে) ২৫ হাজার টাকা এবং মাসে দেড় লাখ টাকার বেশি হবে না। আর গ্রাহকের ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ও মাসে ২৫ হাজার টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
ওপরের এই লেনদেনসীমা শুধু ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অন্য সব নির্দেশনা কার্যকর হবে সব ধরনের গ্রাহকের জন্য। তবে ব্যক্তি থেকে ব্যবসা, ব্যবসা থেকে ব্যক্তি, ব্যক্তি থেকে সরকার, সরকার থেকে ব্যক্তি ইত্যাদি লেনদেনের ক্ষেত্রে লেনদেনসীমা প্রযোজ্য না হলেও নজরদারির সুবিধার্থে ব্যাংক বা এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থায় এসব লেনদেন শনাক্ত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
COMMENTS