মহামাণ্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, 'আমি দেশের রাষ্ট্রপতি, সরকারের নয়। দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেছি। কারও উপকার করতে না পারি, অপকার করিনি। আপনাদের ভালোবাসা-দোয়াই আমাকে রাষ্ট্রপতির আসনে বসিয়েছে।'
শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে নাগরিক কমিটি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে নাগরিক কমিটি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘এমন এক সময়ে রাষ্ট্রপতি হয়েছি, যখন দেশের ক্রান্তিকাল। রাষ্ট্রপতি হিসেবে যেন সঠিক কাজটি সম্পন্ন করতে পারি, আল্লাহ যেন সে সুযোগ দেন। আপনারা দোয়া করবেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৯৬১ সাল থেকে শুরু করে ৫২ বছর ধরে রাজনীতি করছি। ১৯৭০-এর নির্বাচন থেকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আপনারা বারবার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আপনারা দুই হাত ভরে দিয়েছেন। প্রতিদানে কিছু দিতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবাইকে আমি চিনি, নাম জানি। কিন্তু আজ অনেককে দূর থেকে দেখতে পারছি না। কথা বলতে পারছি না। ৬৯-এর আন্দোলনে এই শহরে এক আনা দুই আনা চাঁদা নিয়েছি। আপনাদের সঙ্গে সব সময় কথা বলেছি। ডেপুটি স্পিকার, উপনেতা এবং স্পিকার থাকা অবস্থায় সবার জন্য আমার দরজা খোলা ছিল। এখন নিয়মের মধ্যে পড়েছি।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আইয়ুবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জেল খেটেছি, স্বাধীন বাংলাদেশেও জেল খেটেছি। এখন রাষ্ট্রপতি হয়ে জেলে ঢুকেছি। আগে জেলে থেকে সরকারি খানা খেতাম, এখনো সরকারি খানা খাই। তবে পার্থক্য হলো, খাবারের মান অনেক ভালো। আপনাদের সঙ্গে দেখা হয় না, কথা হয় না। নিয়মের বেড়াজালের জেলখানায় থাকতে হচ্ছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলায় অনেক কীর্তিমানের জন্ম হয়েছে। তাঁদের পথ ও ধারা অনুসরণ ও অনুকরণ করে রাজনীতিবিদদের সাধারণ মানুষের কাজে এগিয়ে আসতে হবে। বিত্তবান লোকদের সাধারণ ও গরিব মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।
কিশোরগঞ্জবাসীর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গুরুদয়াল সরকারি কলেজ আমার কলেজ। কলেজটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার মতো সময় পেলে আমি তা করতে চেষ্টা করব।’
এ ছাড়া আন্তনগর এগারসিন্দুর ট্রেনের আসন সংখ্যা বাড়ানো এবং ঢাকা-কিশোরগঞ্জের মধ্যে একটি কমিউটার ট্রেন চালুর জন্য রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।
নাগরিক কমিটির সভাপতি পৌর মেয়র মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নেত্রকোনার সাংসদ আতিকুর রহমান, কিশোরগঞ্জের সাংসদ মজিবুল হক চুন্নো, আফজাল হোসেন ও রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, জেলা পরিষদের প্রশাসক জিল্লুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহ আজিজুল হকসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। সংবর্ধনায় বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন না।
COMMENTS