নিরাপদ খাদ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণসহ রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণসহ খাদ্যের ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে একটি কতৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিধান করে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ নামে একটি বিল সোমবার সংসদে পাস হয়েছে।
বিলে খাদ্যে ভেজালের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটির ওপর জনমত যাছাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনীর জন্য বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্য নোটিশ দিলেও তারা সংসদে না থাকায় সেগুলো উত্থাপিত হয়নি।
এছাড়া সোমবার ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩’ আরো একটি বিল সংসদে পাস। বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। উক্ত দুটি বিল গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপিত হয়েছিল।
বিলে খাদ্যে ভেজালের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটির ওপর জনমত যাছাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনীর জন্য বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্য নোটিশ দিলেও তারা সংসদে না থাকায় সেগুলো উত্থাপিত হয়নি।
এছাড়া সোমবার ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩’ আরো একটি বিল সংসদে পাস। বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। উক্ত দুটি বিল গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপিত হয়েছিল।
নিরাপদ খাদ্য আইন: খাদ্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন-‘পিউর ফুড অর্ডিন্যান্স, ১৯৫৯’ রহিত করে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ বিলটি পাস করা হয়। এতে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে।
আইনে উৎপাদনকারী, মোড়ককারী, বিতরণকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের দায়বদ্ধতা এবং অপরাধের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। আইনের অধীনে অপরাধের জন্য মামলা দায়ের করে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড প্রদানের বিধান করা হয়েছে।
আইনে খাদ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর অথবা বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারি রাসায়নিক দ্রব্য বা তার উপাদান বা বস্তু যেমন ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম সাইক্লামেট, কীটনাশক বা বালাইনাশক, সুগন্ধি ইত্যাদি খাদ্য দ্রুব্য বা খাদ্যোপকরণে ব্যবহার নিষিদ্ধ করে অমান্যকারির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের এবং অন্যূন চার বছরের কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অন্যূন পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আইনে এ ধরনের অনান্য অপরাধের জন্য আলাদা শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ১৩ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আমলযোগ্যতা অর্থাৎ বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে এবং এসব অপরাধকে অজামিনযোগ্য করা হয়েছে। বাকি অপরাধ সমুহকে অআমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য করা হয়েছে।
মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ): আইনে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক এবং লাইসেন্স প্রাপ্তির পর কোম্পানী গঠন বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। এছাড়া বিলে সরকার কর্তৃক প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগের বিধান করা হয়েছে।
আইনে পণ্য বা সেবা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বিলের ৪ (২) ধারায় লাইসেন্সের অধীন যে সব পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে মাল্টিলেভেল কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে তার উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- গৃহস্থালি পণ্য, ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য, হোম এপ্লায়েন্স পণ্য, প্রসাধন ও টয়লেট্রিজ পণ্য, হারবাল পণ্য, টেলিযোগাযোগ সেবা বা উহার ব্যবহারযোগ্য পণ্য, প্রশিক্ষন সংক্রান্ত পণ্য ও সেবা এবং কৃষিজ ও কৃষিজাত পণ্য।
আইনের ১৫ ধারায় পিরামিড সদৃশ বিক্রয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বলা হয়েছে, মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনায় আওতায় পিরামিড সদৃশ কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না বা অবস্তুগত বা অলিক পণ্য এবং সময়ের ধারাবাহিকতা বা পর্যায়ক্রমিক প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিপণনযোগ্য হইবে এইরূপ কোন পণ্য বা সেবা বিপণন করা যাইবেনা।
আইনের ধারা লংঘনের জন্য অনূর্ধ্ব ১০ বছর এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানাসহ বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের অধীন অপরাধগুলোকে আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য করা হয়েছে।
বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগনকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা এবং এমএলএম কোম্পানিগুলোর কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এই ধরনের কোম্পানিগুলোকে একটি আইনি কাঠামোর আওতায় এনে এদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ ও তদারকের লক্ষ্যে আইনটি প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে এই সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত অধ্যাদেশ রহিত হবে মর্মে বিলে উল্লেখ আছে।
COMMENTS