সাহারা কাপ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ওডিআই সিরিজের প্রথম ওডিআইতে বাংলাদেশী পেসার রুবেল হোসেনের মারাত্মক বোলিংয়ে জয়ের দেখা পেয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে কোরি অ্যান্ডারসন, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জেমস নিশামকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন পেসার রুবেল হোসেন। এর পর আরও ৩টি উইকেট দখল করেন রুবেল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৩ রানে জয় নিয়ে মাঠ থেকে বেড়িয়ে আসে।
প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ কমিয়ে আনা হয়। ৩৩ ওভার তা আনা হয়। কিন্তু রুবেলের মারাত্মক বোলিংয়ে ২৯.৫ বল পর্যন্ত খেলতে পারে কিউইরা। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এলিয়ট করেন সর্বোচ্চ ৭১ রান। এন্ডারসন করেন ৪৬। এছাড়া আর কেউই ভাল রান তুলতে পারেননি। দুই আম্পায়ার প্রথম ওয়ানডেতে জিততে হলে ৩৩ ওভারে ২০৬ রান করতে হবে নিউজিল্যান্ডকে তা বেধে দেয়। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পরে ডাকওয়ার্থ/লুইস পদ্ধতিতে এই লক্ষ্য দেয়া হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। ২০ ওভার পর বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হওয়ার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ছিল ৮২/৩। শেষ ১৩ ওভারে আরো ১২৪ রান করতে হবে অতিথিদের।
গ্রান্ট এলিয়টের সঙ্গে ব্যাট করছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। শুরুতেই রাদারফোর্ডকে বোল্ড করেন সোহাগ গাজী। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ডেভসিচক্ওে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান মাহমুদুল্লাহ।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৫ বলে ২৬৫ রান করে বাংলাদেশ।
সপ্তম ওভারে ২৫ রানে প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানের বিদায় বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। টিম সাউদির করা তৃতীয় ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তামিম ইকবাল (৫)।
টেস্ট সিরিজের সেরা খেলোয়াড় মুমিনুল হক তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ‘ডায়মন্ড ডাক’ অর্থাৎ কোনো বল না খেলেই শূন্য রানে বিদায় নেন। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি এনামুলও (১৩)। জ্বরের জন্য ওয়ানডে সিরিজে খেলা হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। তার বদলে দলে ফিরেন নাঈম ইসলাম। গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে নাঈমের সঙ্গে মুশফিকের ১৫৪ রানের জুটি দলকে ৩ উইকেটে ১৭৯ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করায়। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের দ্বিতীয় ওভারে (৩৭তম) মুশফিক ও নাসির হোসেনের (১) বিদায় স্বাগতিকদের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। ৯০ রান করা মুশফিকের ৯৮ বলের ইনিংসে ২টি বিশাল ছক্কা ও ৮টি চার। এটি তার দ্বাদশ অর্ধশতক। নাঈম, মুশফিকের ৩০ ওভার স্থায়ী এই জুটির সংগ্রহ যে কোনো উইকেটে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১০ সালের অক্টোবরে এই মাঠেই উদ্বোধনী জুটিতে ১২৭ রান করেছিলেন ইমরুল কায়েস ও শাহরিয়ার নাফীস। ষষ্ঠ উইকেটে সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৪৭ বলে ৫১ রানের আরেকটি চমৎকার জুটি উপহার দেন নাঈম (৮৪)। নাঈমের ১১৫ বলের ইনিংসে ১২টি চার। প্রথম ২৯ বলে মাত্র ১ রান করা নাঈম সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। এটি নাঈমের চতুর্থ অর্ধশতক ও ক্যারিয়ার সেরা। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ৭৩ ছিল তার সর্বোচ্চ। নাঈমের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও মাহমুদুল্লাহ (৩০ বলে ২৯) ও আব্দুর রাজ্জাক (৮ বলে ১২) অতিথিদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ এনে দেন। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২৪১ রান। ২০১০ সালে ঢাকা ও ক্রাইস্টচার্চে দুবার এ রান করেছিল বাংলাদেশ। ৪২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলার নিশাম। ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন সাউদি। সাবেক অফস্পিনার শেখ সালাউদ্দিনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ শুরুর আগে এজন্য মাঠে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। ফলে রুবেল হোসেন ম্যান অব দি ম্যাচ নির্বাচিত হয়ে এক হাজার ডলার পুরষ্কার পান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ : ২৬৫/১০ (৪৯.৫)
নিউজিল্যান্ড : ১৬২/১০ (ডি/এল) (২৯.৫/৩৩ ওভার, টার্গেট ২০৬)
ফলাফল : বাংলাদেশ ৪৩ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে ১-০তে এগিয়ে।
COMMENTS