আজ থেকে শুরু হলো শারদীয় দুর্গোৎসব৷ ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে সূচনা ঘটেছে বাঙালির শারদোত্সবের৷ পাঁচদিনের এই উৎসব শেষ হবে ১৪ অক্টোবর সোমবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে৷ আজ থেকে ছয়দিন আগে মহালয়ার পূন্যপ্রভাতে দেবীপক্ষে দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আবাহন করা হয়েছে। বাঙালী হিন্দু সমাজ বিশ্বাস করে দেবী আসছেন মর্ত্যলোকে। আজ মহাষষ্টীর দিনে হবে দেবীর বোধন। মণ্ডপে মণ্ডপে এখন চলছে শিল্পীর তুলির শেষ আঁচড়। দেবীদুর্গার প্রতিমায় আজ চোখ আঁকা হবে। কারণ ষষ্টীর পূর্ব পর্যন্ত দেবী দুর্গার চোখ না আঁকার একটা বিধান প্রচলিত আছে বহুকাল ধরে। শ্রী রামচন্দ্রের লংকা অভিযানে রাবন বধের আগে হয়েছিল দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গার প্রসন্ন ছিলেন লংকাধিপতি রাবণের প্রতি। রামচন্দ্র নানা কৌশল অবলম্বন করেও যখন রাবণকে পরাজিত করতে পারছিলেন না, তখন রাবণেরই ভ্রাতা বিভীষণের পরামর্শে শ্রীরামচন্দ্র দুর্গাপূজা করে দেবীকে তুষ্ট করে রাবণ বধে সিদ্ধকাম হন। রামচন্দ্রের এই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল শরৎকালে। যে কারণে বাঙালি হিন্দু সমাজের এই উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত।
এমনিতে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতো বসন্তকালে। যে কারণে দুর্গাপূজার আরেক নাম বাসন্তীপূজা। তবে মহারাজ রামচন্দ্রের অনুকরণে উপমহাদেশের জমিদারগণ শরৎকালে ধূমধামের সাথে দুর্গাপূজা শুরু করলে শারদীয় দুর্গোৎসবই হয়ে ওঠে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব। আজ মহাষষ্ঠীতে মন্দিরে মন্দিরে উঠবেন দেবী দুর্গা। শ্রীশ্রী লোকনাথ পঞ্জিকা অনুসারে দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ শুরু হবে সকাল নয়টা ৫৭ মিনিট ১৮ সেকেন্ডর মধ্যে। সায়ংকালে হবে দেবীর বোধন। ঢাকের শব্দে মাতবে বাঙালি সমাজ। এবার দেবী মর্ত্যলোকে আসছেন দোলায় চড়ে। এর ফলে মড়ক তথা রোগ- শোক এবং বিশৃঙ্খলা বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকলেও দেবী বিদায় নেবেন গজে বা হতিতে চড়ে, যার ফলস্বরূপ পৃথিবী পরিপূর্ণ হবে শস্যাদি দ্বারা। এর অর্থ হচ্ছে, পৃথিবীতে অন্তত এ বছর আর শস্যের অভাবে মানবকূলকে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হবে না।
COMMENTS