যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে আজ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির প্রচলন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়।
মহান আল্লাহ পাকের প্রতি আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনেও জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাকের প্রতি আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনেও জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সকল কারাগার, সরকারি হাসপাতাল, ভবঘুরে কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম ও শিশু ও মাতৃসদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগে হযরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্রকে কোরবানি দেয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আল্লাহপাকের নির্দেশে জীবদ্দশায় হযরত ইব্রাহিম (আ.) প্রতি বছরই পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহপাকের আনুগত্যের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)ও এই আদর্শ অনুসরণ ও বহাল রাখতে আদিষ্ট হন। তিনিও তাঁর জীবদ্দশায় প্রতিবছরই কোরবানি করেছেন এবং তাঁর উম্মতদের জন্য এই আদর্শ ও প্রথা অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
এ আদর্শ অনুসরণের জন্য গোটা মুসলিম জাহানের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ঈদ উদযাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
এদিকে গ্রামের বাড়িতে আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করার জন্য লাখ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে গেছেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্প্রতিবার পর্যন্ত তিন দিনের সরকারি ছুটি।
ঈদুল-আজহা উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও'তে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা হচ্ছে।
ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অপরদিকে, কোরবানীর পশু কেনার জন্য গত কয়েক দিন যাবত গাবতলী পশু হাটসহ রাজধানী ও আশপাশের অস্থায়ী পশু হাটগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দের মধ্যদিয়ে ঈদ উৎসব উদ্যাপনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সড়ক সজ্জিত করা, আলোকসজ্জার ব্যবস্থা ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু সদন, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, সেফ হোম্স, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে ঈদের দিন উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
জাতীয় পর্যায়ের সাথে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনগুলো দেশব্যাপী ঈদ উদ্যাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তাছাড়া বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে সরকারি কর্মসূচির আলোকে ঈদুল আজহা উদ্যাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন থেকে কোরবানীর পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রাজধানীতে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে। এ ব্যাপারে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহসহ ৩৬২টি ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাতীয় ঈদগাহে ৫ হাজার মহিলা মুসল্লিসহ ২ লক্ষাধিক মুসল্লীর নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে বসার জায়গা, ওজু ও মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের জানান, ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ। রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ লক্ষাধিক মুসুল্লী আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন।
এদিকে, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উদ্যোগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামায়াত সকাল ১০টায় ও পঞ্চম এবং শেষ জামায়াত সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামায়াত আজ সকাল ৯টায় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসুল্লীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেন ও বাস চলাচল করবে।
COMMENTS