রবিবার রাতে জাতীয় সংসদে অপরাধ অ-জামিনযোগ্য এবং সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান রেখে 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) বিল ২০১৩ পাস হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ সংসদে বিলটি উত্থাপন করে পাস করার প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে পাস হয়। মন্ত্রী বলেন, তথ্য প্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০১৩' জারির মাধ্যমে ২০০৬ সালের মূল আইনে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছিল তা আইনে রূপ দেওয়ার জন্য এই বিল আনা হয়েছে।
বিলে শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন সাত বছর এবং সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনে ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর শাস্তির বিধান ছিল। আগের আইনে মামলা করার জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন ছিল। সংশোধিত আইনে অপরাধ আমলে নিয়েই পুলিশ মামলা করতে পারবে। মূল আইনের ৫৪ ধারায় অপরাধ হিসাবে কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ইত্যাদির অনিষ্ট সাধন, ৫৬ ধারায় কম্পিউটার সিস্টেমের হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ, ৫৭ ধারায় ইলেক্ট্রনিক ফরমে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও ৬১ ধারায় সংরক্ষিত সিস্টেমে প্রবেশ সংক্রান্ত অপরাধের দণ্ড পরিবর্তন করে 'অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডের' স্থলে 'অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অন্যুন সাত বছর কারাদন্ড' শব্দাবলী প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
মূল আইনের ৭৬ ধারায় সংশোধনী এনে উক্ত ৫৪, ৫৬, ৫৭ ও ৬১ ধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য (কগনিজেবল) অর্থাত্ এসব অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ কোন ধরনের পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবে এবং এসব অপরাধকে অ-জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এই ধারার অনুচ্ছেদ (২) প্রতিস্থাপন করে বলা হয়েছে, '(ক) ৫৪, ৫৬, ৫৭ ও ৬১ এ উল্লেখিত অপরাধ সমূহ আমলযোগ্য (কগনিজেবল) ও অ-জামিনযোগ্য হইবে এবং (খ) ৫৫, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬২, ৬৩, ৬৪ ও ৬৫ এ উল্লেখিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (নন-কগনিজেবল) ও জামিনযোগ্য হইবে।'
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিত এবং তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আইনটি যুযোপযোগী করে বাস্তবতার আলোকে কতিপয় ধারা/উপধারার পরিমার্জন ও সংশোধনের প্রয়োজন অনুভূত হওয়ায় এই বিলটি উপস্থাপন করা হয়েছে। সংসদের চলতি ১৯তম অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসে (গত ১২ সেপ্টেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ নিয়ম অনুয়ায়ী 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধনী)-২০১৩' অধ্যাদেশটি সংসদে উপস্থাপন করেন। এর আগে ২৯ আগষ্ট মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। পরদিনই অধ্যাদেশটির গেজেট প্রকাশ হয়।
COMMENTS