আগামী ৩ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ডাকা সমাবেশকে সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এ সমাবেশে কয়েক লাখ লোকের জমায়েত নিশ্চিত করার জন্য দলটি থেকে নানা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনকে নানা দিক নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
জাতীয় চার নেতার স্মরণে এবং বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। আর এতে নিজেদরে সর্বোচ্চ শক্তির মহড়া দিতে চায় দলটি। এই সমাবেশকে বিএনপির রাজপথের আন্দোলনের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিকে প্রদর্শনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। আর তাই ঢাকা মহানগরীতে স্মরণকালের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করতে চায় তারা।
জাতীয় চার নেতার স্মরণে এবং বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। আর এতে নিজেদরে সর্বোচ্চ শক্তির মহড়া দিতে চায় দলটি। এই সমাবেশকে বিএনপির রাজপথের আন্দোলনের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিকে প্রদর্শনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। আর তাই ঢাকা মহানগরীতে স্মরণকালের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করতে চায় তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম করতে ইতোমধ্যেই রাজধানীর ১০৩টি ওয়ার্ড কমিটি ও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা কমিটিকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দিনটিকে ঘিরে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যেই প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় জনসভা উপলক্ষ্যে ব্যানার, ফেস্টুন তৈরি করার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা হয়েছে।
এ সমাবেশকে ঘিরে গত মঙ্গলবার ও বুধবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ও ঢাকার আশেপাশের দলীয় সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। তাদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসভায় মূলত মহানগরসহ নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দলের সংসদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেভাবে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তাদের এই নৈরাজ্যে আমাদের দুর্বল হয়ে পড়লে চলবে না। আমারা দুর্বল হয়ে পড়লে তারা আরও বেশি অরাজকতা সৃষ্টি করবে। তাদের এই সুযোগ দেয়া যাবে না। তাদের প্রতিহত করতে আমাদেরও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর জনসভা থেকেই আমাদেরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং নিজেদের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করতে হবে।’
শেখ হাসিনার বৈঠক শেষে বুধবার বিকেলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড নেতাকর্মী ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মহানগরের নেতারা। শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশনাও প্রদান করেন তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বৈঠকে নেতাকর্মীদের বলেন, ‘তিনদিন হরতাল করেও খালেদার সাধ মেটেনি। এ কারণে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তাদের এই কর্মসূচির বিরুদ্ধে আমাদের বিশাল চপটোঘাত দিতে হবে। তারা একটি থাপ্পর মারলে তাদের দুটি থাপ্পর মারার শক্তি অর্জন করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই সমাবেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করতে হবে। কোনো অযুহাত চলবে না সমাবেশে সক্রিয়ভাবে সবাইকে অংশ নিতে হবে। নেতাকর্মীরা সবাই আছে কি না প্রয়োজনে এর হাজিরা নেয়া হবে। হেফাজতিরা যদি চট্টগ্রাম থেকে হেঁটে এসে মতিঝিলে সমাবেশ করতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না। ঢাকা শহরের দেড় কোটি মানুষের মধ্যে কয়েক লাখ কি আমরা উপস্থিত করতে পারবো না?’
এদিকে জনসভা সফল করতে তিনদিনের কর্মসূচিও দিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তারা মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রস্তুতি সভা করে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগর নেতা, এমপি, উপদেষ্টা, থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে যৌথ বর্ধিত সভা এবং শনিবার ঢাকা শহরের প্রতিটি থানায় কর্মীসভা করবে দলটি।
এছাড়া আগামীকাল শুক্রবার থেকে ১৮ দলীয় জোটের হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে ১ নভেম্বর রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে দলটি। গত ২৯ অক্টোবর ১৪ দলের বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সমাবেশকে সফল করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। ইতোমধ্যে আমাদের টানা তিনদিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষের জমায়েত হবে বলে আমরা আশা করছি।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ৩ নভেম্বরের সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য দিক-নির্দেশনা আসতে পারে বলে আশা করছে দলটির নেতারা।
অপরদিকে এই সমাবেশকে বানচাল করার জন্য আগামী রোববার বিরোধী দল হরতাল ডাকতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে ওইদিন হরতাল ডেকে জনজীবনে দুর্ভোগের সৃষ্টি করলে প্রতিবারের ন্যায় ওইদিনও মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। পাশাপাশি বিরোধী দল কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে তা প্রতিহত নয়, জনগণের জানমাল রক্ষায় যা যা করা দরকার তা করবে আওয়ামী কর্মীরা বলে জানিয়েছে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
তবে ওইদিন বিরোধী দল হরতাল ডাকলে কী ঘটবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে দিনটি পর্যন্ত।
COMMENTS