জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো শ্রীপুরের ইন্দ্রপুর (বাঘেরবাজার) এলাকায় তৈরি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্কটি উদ্বোধন করেন। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় সাফারি পার্ক বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশস্থল থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কসহ বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশস্থল থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কসহ বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এদিকে উদ্বোধনের পরপরই সাফারী পার্কটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। তিন হাজার ৬৯০ একর জমির উপর ২৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ পার্কটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় সাফারী পার্ক বলে জানিয়েছেন এর প্রকল্প পরিচালক ও বন সংরক্ষক তপন কান্তি দে।
তিনি জানান, এ প্রকল্প সম্পন্নের মেয়াদ ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত থাকলেও অর্থসংকট ও বিভিন্ন কারণে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। এরইমধ্যে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে আরো দু’বছর লাগবে। এ পার্কে মনোরেল এবং ক্যাবল কার চালুর সিদ্ধান্ত রয়েছে।
থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের সাফারী পার্কের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে এ পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, তথ্য ও শিক্ষাকেন্দ্র, নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম, পার্ক অফিস, বিশ্রামাগার, ডরমিটরী, বন্যপ্রাণী হাসপাতাল, কুমির পার্ক, লিজার্ড পার্ক, ফেন্সি ডাক গার্ডেন, ক্রাউন্ড ফিজ্যান্ট এভিয়ারি, প্যারট এভিয়ারি, ধনেশ পাখিশালা, ম্যাকাউ ল্যান্ড, মেরিন এক্যুরিয়াম, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি বাগান, ক্লাইমেট হাউজ, ভালচার কর্নার, ঝুলন্ত ব্রিজ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ফোয়ারা, বাঘ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, ইকো-রিসোর্ট, ফুড কোর্ট, এলিফ্যান্ট শো গ্যালারি, বার্ড শো গ্যালারি, এগ ওয়ার্ল্ড ও শিশুপার্ক। বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে আছে ২৬ প্রজাতির কয়েক হাজার পশু ও পাখি, যার মধ্যে আছে ১১টি বাঘ, তিনটি সাদাসহ ১০টি সিংহ, ১০০টি ময়ূর, দুই শতাধিক হরিণ, চারটি জিরাফ, ছয়টি জেব্রা, ১৩টি বন গরু, চারটি হাতি, পাঁচটি ভল্লুক ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এরা এখন পার্কে উন্মুক্ত বিচরণ করছে। এসব প্রাণী দেখার জন্য রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীতে সাফারী বাস ও জিপে করে পর্যটকরা প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণরত বাঘ, সিংহ ও ভল্লুক দেখতে পারবেন। এছাড়া আফ্রিকান সাফারী পরিভ্রমণে জিরাফ, জেব্রা, ব্লু ওয়াইল্ড বিস্ট, ব্ল্যাক ওয়াইল্ড বিস্ট, ব্লেস বকসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখতে পারবেন।
পার্কে প্রবেশ ফি : প্রতিজন বয়স্ক ৫০টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের নিচে) ২০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা, শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থী গ্রুপ (৪০-১০০ জন) ৪০০ টাকা, শিক্ষা সফরে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ (১০০ জনের বেশি) ৮০০ টাকা, বিদেশি পর্যটকদের পাঁচ ইউএস ডলার প্রবেশ ফি ধার্য করা হয়েছে।
পার্কিং ফি প্রতিটি বাস/কোচ/ট্রাক ২০০ টাকা, মিনিবাস/ মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, কার/জিপ ৬০ টাকা, অটোরিকশা ২০ টাকা। গাড়িতে সাফারী পার্ক পরিদর্শন অপ্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিজন ৫০ টাকা, বয়স্ক প্রতিজন ১০০ টাকা। এছাড়া ক্রাউন্ড ফিজ্যান্ট এভিয়ারি পরিদর্শন ১০ টাকা, ধনেশ এভিয়ারি ১০ টাকা, প্যারট এভিয়ারি ১০ টাকা।
COMMENTS