যথাযোগ্য মর্যাদায় রোববার সারাদেশে জেল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। গোটা জাতি এদিন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরসেনানী ও জাতীয় চারনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এ কালো অধ্যায়টিকে স্বরণ করেছে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন এ উপলক্ষে দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল।
সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলের শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি শুরু হয়। সকালে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ছাড়াও বনানী কবরস্থানে শহীদ তিন নেতা ও ১৫ আগষ্টে শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন এবং নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, সতীশ চন্দ্র রায়, মোহাম্মদ নাসিম, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. আবদুর রাজ্জাক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মৃণাল কান্তি দাস, একেএম এনামুল হক শামীম প্রমুখ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপের আহ্বান অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও বিরোধী দলের হরতাল কর্মসূচি দেয়া দুঃখজনক। বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি এনিটাইম আমাদের দাওয়াতে চলে আসতে পারেন। আর দাওয়াতের প্রয়োজন নেই।’
প্রধানমন্ত্রীর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, যুম মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবল্পব্দু সাংস্কৃতিক জোট, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বাস্তুহারা লীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বঙ্গবল্পব্দু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ, দেশরত্ন পরিষদ এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নেতারাও বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতি এবং বনানী কবরস্থানে তিন জাতীয় নেতার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বনানী কবরস্থানে পবিত্র ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহীতে জাতীয় নেতা এ এইচ এম কামরুজ্জামানের কবরেও অনুরূপ শ্রদ্ধা নিবেদনসহ মিলাদ, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে বিকেলে আওয়ামী লীগ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়াদী উদ্যোনে জনসভার আয়োজন করে। দলের সভাপতিম-লীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ ও শহীদ কাজী আরেফ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আলোচনা সভা করেছে। এম এ জলিলের সভাপতিত্বে সভায় সিরাজউদ্দীন আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল আলম দুদু, কাজী মাসুদ আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ঢাকা মহানগর শাখার আলোচনা সভায় নূরুজ্জামান ভুট্টোর সভাপতিত্বে হুমায়ুন কবির, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়ন, শাহজাহান, সাকিল আহাম্মেদ, মোশাররফ হোসেন মিলন, সালাহউদ্দিন, আবুল কাশেম, জাহাঙ্গীর হোসেন মিলন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
COMMENTS