জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার মধ্যে বিরোধী দলের হরতাল আহ্বানে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শনিবার ১৮ দলের কর্মসূচি ঘোষণার পর নিজের এলাকা সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
শনিবার ১৮ দলের কর্মসূচি ঘোষণার পর নিজের এলাকা সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
হরতালের কারণে পরীক্ষা হবে কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে নাহিদ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “আপনারা কেন চাচ্ছেন, আমি সমাধান দেব? সমাধান তাদের কাছে জিজ্ঞেস করেন, যারা কর্মসূচি দিয়েছে।”
পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি জানান, এই বিষয়ে রোববার সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি। সেই সঙ্গে হরতাল প্রত্যাহারের জন্য বিরোধী দলকে অনুরোধও করেন তিনি।
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরুর তারিখ নির্ধারিত রয়েছে, যাতে অংশ নিচ্ছে ২১ লাখ শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার সময় হরতাল না দিতে শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যেই নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর হরতালের ঘোষণা দেয় ১৮ দল।
এরপর ৪ ও ৬ তারিখের পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। সংবাদা মাধ্যমের কার্যালয়ে টেলিফোন করেও অনেকে খবর জানতে চান।
এই পরীক্ষা উপলক্ষে রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রীর নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন ছিল। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান সকালে জানান, রোববার শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
নাহিদ গত বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে ছিলেন। হরতালের খবর শোনার পর তিনি দুপুরেই ঢাকার পথে রওনা হন। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বিকালে নিজের সরকারি বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করবেন মন্ত্রী।
ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে হরতালের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, “জেএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে বিরোধী দলের হরতাল ‘অমানবিক ও অসভ্যতা’।
“নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতেই বিরোধী দল এমন বিবেকহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মসূচি দিয়েছে।”
ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলনে এই হরতালকে ‘মানবতা ও শিক্ষাবিরোধী’ আখ্যায়িত করে এই কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানান নাহিদ।
“আমি তাদের (১৮ দল) বলব, নৈতিকতা বিবর্জিত,মানবতাবিরোধী এই হরতাল প্রত্যাহার করুন।”
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ (ফাইল ছবি) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ (ফাইল ছবি) হরতাল প্রত্যাহার না হলে সিদ্ধান্ত কী হবে- জানতে চাইলে প্রথমে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি।
“কিভাবে এগোতে হবে আগামীকাল তা জানানো হবে,” পরে বলেন মন্ত্রী।
৪ নভেম্বর সোমবার জেএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র এবং ৬ নভেম্বর বুধবার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা রয়েছে। জেডিসিতে ৪ নভেম্বর কুরআন মজিদ ও তাজবিদ এবং ৬ নভেম্বর আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা।
নাহিদ বলেন, “আমরা চার মাস আগে পরীক্ষার সূচি দিয়েছি। আর তারা আজকে হরতাল দিল। এত মানুষের উদ্বেগের মধ্যে বিবেকহীন ছাড়া আর কেউ এরকম কর্মসূচি দিতে পারে না। আমি ক্ষুব্ধ, উদ্বিগ্ন।”
“হরতাল তুলতেই হবে,” বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, “যারা ক্ষমতায় ছিল, ভবিষ্যতেও যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, সেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিভাবে এ ধরনের শিক্ষা বিরোধী, অনৈতিক কর্মসূচি দিতে পারেন?
হরতাল প্রতিরোধ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কেউ এই হরতাল চাই না। সবাই মিলে প্রতিরোধ করুন।”
রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় বিরোধী দলকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নাহিদ বলেন, “সংবিধান আছে, সংসদ আছে। আলোচনা করে সমাধান করুন।”
COMMENTS