শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন সবুজের অর্থ ও সম্পদ বেড়েছে। আর শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত তেলিহাটি ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল হয়েছেন সম্পদশালী।
২০০৯ সালের নির্বাচন ও চলতি নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর কারো বিরুদ্ধেই কোনো মামলা নেই।
মুহাম্মদ ইকবাল হেসেন সবুজ (মটর সাইকেল): তিনি জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিএ পাস। ২০০৯ সালের হলফনায় সাধারণ ব্যবসায়ী, সরবরাহকারী ও ঠিকাদার হিসেবে নিজের পরিচয় তুলে ধরেন। বর্তমানে দাখিল করা হলফনামায় কৃষি, মৎস্য ও সাধারণ ব্যবসায়ী। তিনি মোট বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৪৬ হাজার টাকা ও গৃহ ও সম্পত্তির আয় ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা ও ভাতা থেকে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
সম্পদ: মোট সম্পদের পরিমাণের মধ্যে নগদ টাকা ২৯ লাখ ৮১২ টাকা, নিজ নামে সোনার চেন রয়েছে ১০ তোলা, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী এক লাখ ২৫ হাজার ও আসবাবপত্র রয়েছে ১ লাখ টাকার। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমি রয়েছে ২০৫ শতাংশ, অকৃষি ১৪৯ শতাংশ এবং গাজীপুর শহরে যৌথ মালিকায় রয়েছে ১৫ শতাংশ জমি।
২০০৯ সালের হলফনামায় তিনি তার ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ১৫ হাজার। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল নগদ টাকা ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ১২ টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৬০৭ টাকা, নিজ নামে স্বর্ণ ১০ তোলা, ইলেকট্রনিক্স এক লাখ ২৫ হাজার ও এক লাখ টাকার আসবাবপত্র ছিল।
আলহাজ্ব আব্দুল জলিল (আনারস) : তিনি শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী, বিএ পাস। পেশায় ব্যবসায়ী। জেসমিন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডার্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাড়ি ভাড়া থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার এবং ব্যবসা থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় করেন।
সম্পদ: অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ৫০হাজার, ব্যাংকে জমা ৫৫হাজার, ২২লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়িও রয়েছে তার। নিজ নামে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৮০ হাজার, আসবাবপত্র এক লাখ। নিজ নামে স্বর্ণ রয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে কৃষি জমি ১৫ বিঘা, স্ত্রীর নামে এক বিঘা, অকৃষি জমি নিজ নামে ৫ বিঘা ও স্ত্রীর নামে এক বিঘা। তার এক কোটি ৫০ লাখ টাকার দ্বিতল একটি বাড়ি এবং ১০ টা সেমি পাকা ৩৪ রুম রয়েছে।
তিনি ২০০৯ সালে হলফ নামায় দেখিয়েছিলেন কৃষি থেকে আয় ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ও সম্মানী ভাড়া ১৮ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ নগদ ছিল ২০ হাজার ২৫০ টাকা। ব্যাংকে ছিল ৬০ হাজার টাকা, গাড়ি ছিল একটি, ইলেকট্রনিক্স ৭০ হাজার ও স্বর্ণ নিজ নামে ২৫ তোলা। স্থাবর সম্পত্তি ছিল কৃষি জমি ১০ বিঘা, অকৃষি ৫ বিঘা ও ঘর ছিল ৩ টি।
আব্দুল মোতালেব (কাপ-পিরিচ): তিনি শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি মনোনীত একমাত্র প্রার্থী, বিএ পাস। ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি আয় দেখিয়েছেন দুই লাখ টাকা, কৃষিখাত থেকে ৪০ হাজার।
সম্পদ: অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগদ ৬ লাখ, ব্যাংকে জমা ৫ হাজার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৫১ হাজার, আসবাবাপত্র ৬০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে স্বর্ণ রয়েছে ৫ ভরি। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমি ৯০ শতাংশ, যৌথ মালিকানায় ১০ বিঘা এবং স্ত্রীর নামের সম্পত্তি রয়েছে দুই বিঘা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুদ্দিন খন্দকার (ঘোড়া) এসএসসি পাস। তার কোনো পেশা নেই। আয়ের উৎস কৃষিখাত। তিনি কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন এক লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সম্পদ: অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে কৃষি জমি ৩০ বিঘা ও অকৃষি জমি রয়েছে ২০ লাখ টাকা মূল্যের।
২০০৯ সালে তার হলফনামায় পেশা দেখিয়েছিলেন কৃষি। ওই সময় কৃষি থেকে আয় ছিল ৫০ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ১৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ টাকা ৫০ হাজার, আসবাবপত্র ৫০ হাজার ও অন্যান্য ২০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমি ৩৫ বিঘা, অকৃষি ১০ কাঠা, বাড়ি ছিল দুইটি।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা ও গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহনওয়াজ দিলরুবা খান জানান, প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এবং মামলার বিষয়সহ অন্য তথ্য ভোটারদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
COMMENTS