শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার খবরে ভোটারদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ব্যাপারে সন্দিহান প্রার্থীরাও তাদের কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে এনেছেন। আবারও শুরু হয়েছে মাইকিং ও পোস্টার ঝুলানোর কাজ। তবে ভোটারদের সাথে সাক্ষাত তথা গণসংযোগ থেকে কোনো প্রার্থী বিরত থাকেননি।
গত ১১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণার পর শ্রীপুরের ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থেমে যায় ও প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ করে দেন। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন ভোটারসহ প্রার্থীরা। নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার দাবীতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসুচী পালন করে ১৯ দল।
শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল জলিল (আনারস) বলেন, ভোটারদের উৎসব আয়োজনে নির্বাচন কমিশন সম্মান দেখাবেন। খুব শীঘ্রই নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করবেন। এরকম একটা বিশ্বাস আমার ছিল। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে গণমাধ্যমগুলোতে আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নতুন তারিখ ঘোষণার খবর পাই।
এ খবরে শুধু আমি নই শ্রীপুরের ভোটারসহ সকল নাগরিক খুব খুশী হয়েছেন। নির্বাচন স্থগিত হলেও আমাদের গণসংযোগ স্থগিত থাকেনি। তবে এ মূহুর্তে আমরা সার্বিক নিরাপত্তা বেষ্টিত একটি নির্বাচন চাই।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রউফ বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার খবরে ভোটারদের মধ্যে নতুন করে উৎসবের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা গণসংযোগে ছিলাম, এবার নতুন করে আবার প্রচারণা শুরু করেছি।
১৯ দলের মনোননীত প্রার্থী আব্দুল মোতালেব বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল। এর পর থেকে একদিকে নির্বাচনী গণসংযোগ ও অন্যদিকে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার জন্য মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করেছি।
আমরা মনে করি আমাদের দাবীর মুখে নির্বাচন কমিশন তথা সরকার নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই।
১৯ দল মনোনীত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদা জাহান স্বপ্না বলেন, নির্বাচন স্থগিত ঘোষণার পর প্রার্থী হিসেবে আমাদের মনোবল সামান্য ভেঙ্গে গিয়েছিল। কিন্তু ভোটারদের মনোবল যাতে ভেঙ্গে না যায় সেজন্য ভোটারদের সাথে নিয়মিত সাক্ষাত করেছি।
উঠোন বৈঠকসহ অন্যান্য প্রচার চালাতে পারিনি। নির্বাচন হবে কিনা এ সন্দেহটি মনে কাজ করছিল। নতুন তারিখ ঘোষণার পর এখন প্রচারণায় নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছি।
গোসিঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম বলেন, ভোটার হিসেবে নির্বাচন স্থগিতের খবরে কষ্ট পেয়েছিলাম। নতুন তারিখ ঘোষণায় আনন্দিত হয়েছি।
কাওরাইদ বাজারের সমাজসেবী রাজু আহমেদ বলেন, ভোটারের চাইতে সবচেয়ে বেশি ভেঙ্গে পড়েছিলেন প্রার্থীরা। তাদের চোখে মুখে এ দৃশ্য দেখা না গেলেও কথায় তা বুঝতে পেরেছি। আর নতুন তারিখ ঘোষণায় আমাদের চাইতে বেশি খুশী হয়েছেন প্রার্থীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল জলিল ও ইকবাল হোসেন সবুজের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে অর্ধশত আহত হন। গুরুতর আহত উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক আল আমীন শেখ ৯ মার্চ রাত ১২টার দিকে চিতিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১১ মার্চ নির্বাচন কমিশন পরিবেশ না থাকায় শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহনওয়াজ দিলরুবা খান বলেন, নতুন তারিখ ঘোষণার খবর পেয়েছি। তবে নির্বাচন কমিশনের পত্র না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।
COMMENTS