নিউজ ডেস্ক: ভারতের ১৬তম সংসদ নির্বাচনের (লোকসভা নির্বাচন) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় সোমবার ছয়টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ক্রমান্বয়ে আরও আট দফায় বাকি আসনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
নির্বাচন শুরুর মাত্র ২ দিন আগে এনডিটিভির সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের প্রায় দ্বিগুন আসনে জয়ী হতে পারে। এককভাবে বিজেপি ২১৪টি আসন পেতে পারে।
জোটভুক্ত দলগুলোসহ বিজেপি পেতে পারে ২৫৯ আসন। তবে ৫৪৩ আসনের সংসদে সরকার গঠন করতে ২৭২ আসন লাগবে।নির্বাচনে কংগ্রেস পেতে পারে ১০৪ আসন। কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট পেতে পারে বড়জোর ১২৩ আসন।
ফলে এবার বড় ধরণের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে পরপর দুইবার পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা ১২৮ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেস।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ৮১ কোটি ৪৫ লাখ। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার। ভোটাররা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট দেবেন। ২০০৪ সালে দেশটিতে প্রথমবারের মতো এ যন্ত্রের সাহায্যে ভোট গ্রহণ করা হয়।
লোকসভার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা ও সিকিম রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও ভোট গ্রহণ করা হবে।
১২ মে সর্বশেষ দফা ভোটগ্রহণের পর ১৬ মে সবগুলো আসনের ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবার ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ পেলে কংগ্রেস সবার জন্য প্রবৃদ্ধি, জনকল্যাণ কর্মসূচি, সবার জন্য স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পেনশনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিজেপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা না করলেও নরেন্দ্র মোদি তার দেশজুড়ে দেয়া বক্তৃতায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দফায় সোমবার আসাম রাজ্যের পাঁচটি আসন ও ত্রিপুরা রাজ্যের একটি আসনের নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ৯ এপ্রিল ছয়টি রাজ্যের সাতটি আসনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
তৃতীয় দফায় ১০ এপ্রিল সম্পন্ন হবে ১৪টি রাজ্যের ৯২টি আসনের ভোটগ্রহণ। এরপর চতুর্থ দফায় ১২ এপ্রিল তিনটি রাজ্যের পাঁচটি আসনের ভোটগ্রহণ করা হবে।
১৭ এপ্রিল হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনের ভোট। এদিন পঞ্চম দফায় ১৩টি রাজ্যের মোট ১২২টি আসনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এরপর ষষ্ঠ দফায় ২৪ এপ্রিল ১২টি রাজ্যের ১১৭টি আসনের ভোট নেওয়া হবে।
নির্বাচনের সপ্তম দফায় ৩০ এপ্রিল নয়টি রাজ্যের ৮৯টি আসনের এবং অষ্টম দফায় ৭ মে সাতটি রাজ্যের ৬৪টি আসনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
সর্বশেষ ১২ মে তিনটি রাজ্যের ৪১টি আসনের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে নির্বাচনী মহোৎসবের।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার।
ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা করছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।
এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (আইএনসি) নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) জোট ও প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নের্তৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোট প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে।
আইএনসি ছাড়াও ইউপিএ জোটে রয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)।
অপরদিকে, এনডিএ জোটে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি), তেলেগু ডেসাম পার্টি (টিডিপি), শিব সেনা, স্বাভীমানি পক্ষ ও রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষসহ মোট ২২টি দল।
সম্প্রতি কংগ্রেস ও বিজেপিকে কাঁপিয়ে দিয়ে দিল্লির রাজ্য সরকার গঠন করা আম আদমি পার্টিও (এএপি) নির্বাচনে আলোচনায় রয়েছে।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে বিজেপির নের্তৃত্বাধীন এনডিএ’র জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করলে কাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে, দল বা জোটের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি ।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি ও এএফপি।
COMMENTS