সাদর আমন্ত্রণে মাঙ্গলিক চিন্তা ও শুভবোধের উদ্বোধনে হৃদয়সিক্ত প্রাপ্তির ডালিতে নতুনের অভিষেকের দিন পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ নিয়ে এসেছে নতুন দিনের বারতা। সময় প্রবাহমান। নদীর স্রোতের মতো সময়ও কখনো থেমে থাকে না। বয়ে চলে আপন গতিতে। সময়ের এ প্রবাহমানতায় মহাকালের অতল গহ্বরে হারিয়ে গেছে আরেকটি বাংলা বছর। বাংলা সন ১৪২০ তার শেষ গান গেয়ে বিদায় নিয়েছে। বসন্তকে বিদায় জানিয়ে এসেছে আরেক নতুন বছর।
আজ সারাদেশে তথা বিশ্বের সমগ্র বাঙ্গালী সাথে গাজীপুরের কালীগঞ্জের সর্বশ্রেণীর পেশার বাঙ্গালীরাও মেতে উঠেছিল নতুন বর্ষবরণ উৎসবে।
শুভ হালখাতা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা, গান-বাজনা ও নানা প্রদর্শনীর মাধ্যমে কালীগঞ্জের মানুষ দিনটি উদ্যাপন করেছে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী লোক ও বৈখালী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলায় গান-বাজনা, যাত্রাপালাসহ আয়োজন করা হয়েছে নানা সাংস্কৃতিক সম্ভার। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে উপজেলার রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ (আরআরএন) পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আর এ সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য শিল্পী ও স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবেন।
বছরের প্রথম দিনের শুরুতে সকাল ৮টায় উপজেলা প্রশাসন ও সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে কালীগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এসে সমাপ্ত করে। শোভাযাত্রায় বাংলার বাঙ্গালীদের কৃষ্টি কালচারের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন জিনিস তুলে ধরা হয়। পলো, পাতলা, পালকি, হাতি, ঘোড়া, রিক্সা ও ভ্যান বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে বর্ণাঢ্য র্যালীতে অংশগ্রহণ করে। র্যালী শেষে পান্তা-ইলিশ, রকমারী ভর্তা, দই-মিষ্টি ও চিড়া-মুড়ি খাওয়ানো হয়। আর পহেলা বৈশাখে কালীগঞ্জের ব্যস্ত সড়কগুলো বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আঁকা হয়েছে বৈশাখী আলপনা।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন- কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এস এম নজরুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল আহসান তালুকদার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি, উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন স্বপন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম, কৃষি অফিসার মো. জসিম উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অফিসার ও লেখক শেখ নওশের আলী হিরাসহ উপজেলা পরিষদে কর্মরত বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ।
বিগত দিনের সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শিকড়ের টানে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছে কালীগঞ্জের সর্ব শ্রেণী ও পেশার মানুষ। নতুন বছর কালীগঞ্জের মানুষের জীবনে কল্যাণ প্রাপ্তি এবং প্রেরণার স্বপ্ন নিয়ে হাজির হবে এটাই এখানকার সকল মানুষের প্রত্যাশা।
COMMENTS