প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশু কিশোরদের সৎ, চরিত্রবান ও আদর্শবান নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলবে হবে। স্কাউট শিশু- কিশোরদের প্রতি আহবান জানিয়ে প্রধান মন্ত্রী বলেছেন, আমি আশা করব, তোমরা দেশের উন্নয়ন, সম্প্রতি ও শান্তির জন্য সদা প্রস্তুত থাকবে। বর্তমান বিশ্ব তথ্য ও প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে চলেছে। নিজেদের আধুনিক বিশ্বের উপযোগী নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি শনিবার সকালে গাজীপুরের মৌচাক জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নবম বাংলাদেশ ও প্রথম সানসো স্কাউট জাম্বুরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে এসব কথা বলেছেন।
ভাষণের পর প্রধানমন্ত্রী পায়রা অবমুক্ত করে ও বেলুন উড়িয়ে এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে বাংলাদেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্কাউটদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপভোগ করেন এবং তাবু এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছলে স্কাউট কর্মকর্তাগণ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে জাম্বুরি স্কার্ফ, ব্যাজ, স্যুভেনির ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পতাকা উত্তোলনের পর তিনি মাঠের সমাবেশ পরিদর্শন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রধান জাতীয় কমিশনার ও জাম্বুরি চীফ মো. আবুল কালাম আজাদ ও জাম্বুরি সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি হেদায়েতুলাহ আল মামুন, এনডিসি। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
“শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য স্কাউটিং” এই থিমকে সামনে রেখে এবারের জাম্বুরিতে দেশ- বিদেশের প্রায় নয় হাজার স্কাউট, স্বেচ্ছাসেবক ও স্কাউট কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে নেপাল, শ্রীলংকা ও ভুটান থেকে ২৭ স্কাউট সদস্য অংশ নিচ্ছেন। জাম্বুরিতে মোট ১৩ অ্যাডভেঞ্চার ও কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে আকর্ষণীয়, উদ্দীপনামূলক, শিক্ষণীয় ও প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রাম সাজানো হয়েছে। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত আট দিনব্যাপী এ জাম্বুরি অনুষ্ঠিত হবে। জাম্বুরি চলাকালে নারী স্কাউটিংয়ের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছে। জাম্বুরির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ উপনেতা, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সচিব ও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
এবার জাম্বুরি প্রোগ্রামকে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রথম অংশের অ্যাডভেঞ্চার হবে প্রতিযোগিতামূলক। এই অ্যাডভেঞ্চারসমূহে অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্কাউটরা জাম্বুরি স্টিকার অর্জনের পাশাপাশি ইউনিটসমূহের স্কাউট দক্ষতার মান পরিমাপ করতে পারবে। এ অংশের অ্যাডভেঞ্চারগুলো হলো- আমাদের তাঁবু, দক্ষতা ও মেধাবী। দ্বিতীয় অংশের অ্যাডভেঞ্চারগুলোতে অংশগ্রহণ করে স্কাউটরা জ্ঞান অর্জন ও ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারবে।
তৃৃতীয় অংশের কার্যক্রমগুলো মূলত কেন্দ্রীয়, ভিলেজ ও সাব ক্যাম্প ইভেন্ট হিসেবে বাস্তবায়িত হবে। স্কাউটাররা এই ইভেন্টে উদ্বোধন অনুষ্ঠান, ভিলেজ নাইট, প্রদর্শনী পলী, টপ অ্যাডভেঞ্চারস গেদারিং, ওল্ড স্কাউট রি-ইউনিয়ন, ইয়ূথ জোন এবং গ্র্যান্ড ক্যাম্প ফায়ার ও সমাপনি অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম উপভোগ করবে। অংশ গ্রহণকারী স্কাউটরা জাম্বুরিতে যুগোপোযোগী প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে নিজেদের যোগ্যতা যাচাই, অভিজ্ঞতা বিনিময়, বন্ধুত্ব স্থাপন ও নিজেকে সুযোগ্য করে গড়ে তোলার সুযোগ লাভ করবে।
COMMENTS