এ.জে শাহীন আদরঃ ঘটা আয়োজনে প্রায় ১৮২ জনের উপস্থিতি। এরা কারা; ক্রীড়াঙ্গনের চালিকা শক্তি। সারাদেশের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্রীড়াঙ্গনের সব পুরোধা ব্যক্তিত্বরা বৃহস্পতিবার তাদের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় মিলিত হয়েছে। সারাদিন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সভায় তারা আগামী দিনের ক্রীড়াঙ্গন সম্পর্কিত তাদের সব কথাই মন খুলে বলেছেন। যেখানে সভাপতিত্ব করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী বীরেন শিকদার এমপি। শুনেছেন সব মন-ধ্যান দিয়ে।
শুরু হয়েছে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে; যা দিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রধান নির্বাহী; তথা সচিব শিবনাথ রায়। বক্তব্য রেখেছেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আরিফ খান জয় এমপি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর মোহাম্মদ।
কার্যবিধির এজেন্ডা অনুযায়ী অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে একটি সামগ্রিক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও গত সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেছেন পরিষদের সচিব শিবনাথ রায়। সভায় বিগত ২ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পরিষদের কোষাধ্যক্ষ বাদল রায়।
সভায় ক্রীড়া ফেডারেশন, বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন আশিকুর রহমান মিকু, ইউসুফ জামিল বাবু, রাফিয়া আক্তার ডলি, মিজানুর রহমান মানু, সিরাজউদ্দিন মোহম্মদ আলমাগীর, আসাদুজ্জামন কোহিনূর প্রমুখ।
সভায় ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ গড়ে তুলতে ফেডারেশন, বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন আন্তরিক উদ্যোগ।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে ক্রীড়া সংগঠকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে একটি করে ল্যাপটপ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। সভায় অসচ্ছল ক্রীড়াবিদদের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপের পাশাপাশি স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার গঠনতন্ত্র সংশোধনী ও সময়োপযোগী করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি তার বক্তব্যে প্রস্তাব করেন, যাতে ক্রীড়া সংস্থা, ফেডারেশন গুলোতে কিছু স্থায়ী আমানত দেয়া হয়। যা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিটের মাধ্যমে অর্জিত ইন্টারেস্টের অর্থে সারা বছর খেলাধুলা পরিচালনা করা যায়।
সভায় বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সহ ৪৫টি ক্রীড়া ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক; ৭টি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও ৬৪টি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশ থেকে আগত ক্রীড়া সংঠকরা; তাদের বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবী জানায়। এবং স্থানীয় পর্যায়ের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি বাফুফের ডিএফএ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাস্তবায়নকল্পে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়ার হয়েছে। স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার জন্য গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেও ২০তম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এখন থেকে নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছেন। শুরুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
নানা তর্ক-বির্তক বার্ষিক সাধারণ সভারই অংশ। এখানেও তার ব্যত্তয় ঘটেনি। কিন্তু সবাই কিন্তু দিনশেষে মহা আনন্দের ঢেকুর তুলেছেন। যেখানে ৮০ বছরের ক্রীড়া-সংগঠকের পাশে নতুন প্রজন্মের ৩০ বছরের টকবগে তারুণ্যের নিখাদ সম্মিলন ক্রীড়াঙ্গনকে আবারও প্রজ্বলিত করেছে। যা ক্রীড়াঙ্গনের আরও সাফল্য অজর্নে আলোর বাতিঘর হয়েই থাকবে। কারণ ঠিক কতদিন দিন পর নব্বইয়ের দশকের ফুটবলার এখন সংগঠক বরুণ- ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরিফীন টুটুরের সহচার্য পেয়েছেন; তা মনে করতে পারেননি।
অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ : ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাস-ঐতিহ্যেও বাতিঘর’ শিরোনাম একটি জমকালো স্যুভিনিয়র উপস্থিত সকলের ব্যাপক প্রসংশা কুড়িয়েছে। ১৯৭২ সালে ক্রীড়া পরিষদের যাত্রা শুরুর পর থেকে তার ইতিহাস-ঐহিত্য-অর্জন-স্থাপনা নিয়ে এমন বিস্তারিত পুস্তিকা আর প্রকাশ হয়নি।
COMMENTS