শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ২ মাসে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১০ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এমনকি প্রভাবশালীদের সহায়তায়, প্রতি রাত্রেই দেওয়া হচ্ছে গ্যাসের সংযোগ বিনিময়ে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংশের লীলাখেলায় কিছু লোকজন মেতে উঠলেও প্রশাসন সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নেয়ার সময় এলাকার সাধারণ লোকজন প্রশাসনকে জানালেও তারা তিতাস কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে চুপ হয়ে থাকেন। এমনি অবস্থায় সারা দেশের ন্যায় শ্রীপুরেও চলছে গ্যাস চুরির মহোৎসব।
নিম্নমানের অপরিকল্পিত কাজের ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনা ঘটতে পারে মূল্যবান জীবনের হানী। অবৈধ গ্যাস সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে মাওনা ১নং ওয়ার্ডের সদস্য জর্জ মিয়ার এলাকায় এখানে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রতি গ্রাহককে রাইজার তুলে দিয়েছেন জজ মিয়া স্বয়ং নিজেই। পাশ্ববর্তী শিল্প লাইন ফুটো করে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। একই এলাকার এশিয়া কম্পোজিট সংলগ্ন ১০০ গ্রাহকের অবৈধ সংযোগের কাজ চলতেছে।
মাওনা বাজারের উত্তর পার্শ্বে পৌর এলাকার সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফরোজা আক্তারের এলাকায় অবৈধ সংযোগ রয়েছে ২০০ এর উপরে। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস অফিস সংলগ্ন পেয়ারআলী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে প্রায় শতাধিক সংযোগ। পৌর এলাকা ১নং সি এন্ড বি ২নং সি এন্ড বি, মাষ্টারবাড়ী এলাকায় রয়েছে কয়েক হাজার গ্যাস সংযোগ। দীর্ঘদিন যাবত গ্যাসের চুলা জ্বললেও কোন বিল দিতে হচ্ছে না সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
শ্রীপুর উপজেলার সর্বত্রই রয়েছে শিল্প কলকারখানা এর ফলে শিল্প কারখানায় পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সুযোগে দালালরা সাধারণ লোকজনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অবৈধ সংযোগ বৈধ করে দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়ে প্রতি রাইজার বাবদ ৫০-৭০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন। তারপর চুক্তি হয় স্থানীয় প্রশাসন ও তিতাস কর্তৃপক্ষের সাথে সর্বশেষ ঠিকাদারদের সাথে। চুক্তিমত টাকা দিলেই মাটি খুড়ে ফেলা হয় নিন্মমানের পাইপ দিয়ে সর্বশেষ অভিনব কায়দায় পাইপ ফুটো করে সংযোগ। ২ দিন সময়েই মিলে যায় সংযোগ।
শ্রীপুর উপজেলার অজপাড়াগাঁ বারতোপা সেখানেও রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। দিনের পর দিন অপেক্ষা করে বৈধ গ্রাহকরা লক্ষ টাকা খরচ করেও যেখানে গ্যাস পায় না সেখানে টাকা দিলেই রাতে রাতে মিলে যায় সংযোগ।
শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয়ে গাজীপুরের তিতাস গ্যাস এন্ড ড্রিস্ট্রিবিউশন কোম্পনীর ব্যবস্থাপক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণ অভিযানে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন কাদির প্রশাসনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, অবৈধ সংযোগের সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শ্রীপুর থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমূল হাসান ভূইয়া জানান, অবৈধ গ্যাস সংযোগ কারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
COMMENTS