রেজাউল কবির রাজিবঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক এলাকার সকল রাস্তা, ড্রেন, ভাঙ্গা ও খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। এসব ভাঙ্গা খানাখন্দ রাস্তাঘাট সাময়িক চলাচল উপযোগী করে সংস্কারেরও কোন উদ্যোগ নেই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের।
বর্তমানে এসব ভাঙ্গা খানাখন্দকের রাস্তায় যান চলাচলতো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেঁটেও ঘরে ফিরতে পারছেন না।
এদিকে ড্রেনের ময়লা সরানোর নামে লাখ লাখ টাকার পারিশ্রমিকে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা ও পয়ঃপ্রণালী তুলে ড্রেনের পাশের রাস্তার ওপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখায় ময়লায় সয়লাব হয়ে পড়েছে টঙ্গীর সকল রাস্তা ঘাট। রাস্তায় ছড়িয়ে দেয়া এসব দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার দুর্গন্ধে এক দিকে মানুষ যেমন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কাদাপানি ও ময়লা দিয়ে মানুষ হেটে ঘরে ফিরতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু ও নারীরা স্কুল কলেজে যাতায়াতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। টঙ্গীর এমন কোন রাস্তা খোজে পাওয়া যাবে না, যে রাস্তা ভাঙ্গা চুড়া ও খানাখন্দক নেই। এদিকে ড্রেনের ময়লার এসব বিষাক্ত কাদা পানির সংস্পর্শে মানুষের পায়ে চর্মরোগও সৃষ্টি হয়েছে।
শিল্পনগর টঙ্গীর মেঘনা রোড ও আশপাশের এলাকার রাস্তাটি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রোডে ৮/১০টি সরকারী ও বে-সরকারী শিল্প কারখানায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এসব ফ্যাক্টরির মালিক-কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রতিদিন জীবন বাজী রেখে কর্মস্থলে আসা যাওয়া করলেও বর্তমানে এ রোডটি অবস্থা বড়ই নাজুক অবস্থায় পরিণত হয়েছে। টঙ্গী বিভিন্ন ড্রেনের ময়লা আবর্জনা ফেলে এই রাস্তাটি বর্তমানে চলাফেরা করার মত উপযোগী না থাকায় চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
টঙ্গীর মেঘনা রোডে রয়েছে টঙ্গী ন্যাশনাল টিউবসসহ উল্লেখযোগ্য সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মেঘনা টেক্সটাইল মিলস্, এলিট গার্মেন্টস, এলিট পেইন্ট, মা টাওয়ার, পিনাকী গ্রুপ, সিনহা, হক এন্ড কোম্পানীসহ ছোট বড় ১৫/২০টি শিল্প কারখানা ও অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ন্যাশনাল টিউবস লিঃ কর্মকর্তা আঃ আজিজ জানান, টঙ্গী একটি ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য শিল্প শহর। এ ছাড়াও এটি একটি সিটি কর্পোরেশন এলাকা। এ এলাকার রাস্তা ঘাট খুবই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। এ রাস্তাটি খারাপ হওয়ার কারণে ন্যাশনাল টিউবস এর উৎপাদিত পাইপ বিশেষ করে পেট্রোবাংলার অধীনস্ত গ্যাস কোম্পানী সমূহ ৪০ফুট দৈর্ঘ্য এ পি আই পাইপ ডেলিভারি করে থাকে টেইলারের মাধ্যমে এবং উক্ত পাইপের কাঁচা মাল স্টিল স্পিন বিদেশ থেকে আমদানী করা হয়। যা অনেক সময় রাস্তাটি অনুপযোগী থাকায় গর্তের মধ্যে পড়ে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। তখন তা ফ্যাক্টরিতে আনতে আমাদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পিনাকী গ্রুপের জিএম মাহাবুব আলম জানান, টঙ্গীর মেঘনা রোড গাজীপুরের টঙ্গীর একটি সুনাম ধন্য রাস্তা এ রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী থাকায় আমাদের উৎপাদিত মালামাল ডেলিভারি দিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শ্রমিকরা ফ্যাক্টরিতে আসা যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগের এর শিকার হতে হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক নীলা বলেন, টঙ্গীতে কাজের সন্ধ্যানে এসেছি কিন্তু, আমাদের সকাল বিকাল ২ বেলা আসা যাওয়া করতে হয়। আসা যাওয়ার মাঝে আমাদের নানামুখী সমস্যার শিকার হতে হয়। কিছুদিন আগে আমাদের এক বোন এই রাস্তায় গর্তে পড়ে মারাত্মক আহত হয়ে চাকরী ছেড়ে বাড়িতে চলে যেতে হয়েছে।
মেঘনা টেক্সটাইল মিলস এর চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জাহিদ আল মামুন বলেন, রাস্তাটির মোটামুটি ভাল ছিল। কিন্তু ইতিপূর্বে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকার ড্রেনের বর্জ্য আবর্জনা ফেলে রাস্তাটি দিয়ে চলাচলে অনুপযোগী করে রেখেছে। প্রতিনিয়ত ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে নানারূপ দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়। তাই বিগত দিনের মতো বর্তমানে আমাদের ফ্যাক্টরির উৎপাদিত মালামাল ডেলিভারি দিতে নানারূপ দুর্ভোগের স্বীকার হতে হচ্ছে। অতিসত্ত্বর রাস্তাটি মেরামত করা একান্ত জরুরি বলে মনে করি।
COMMENTS