প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে 'রূপকল্প-২০২১' এর লক্ষ্য অনুযায়ী আমরা মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করতে পারবো।
পরবর্তীকালে 'রূপকল্প-২০৪১' বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত এবং মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে এক শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, সুখী ও উন্নত জনপদ।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার দশম জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা আরও বলেন, "আওয়ামী লীগের রূপকল্প-২০২১ এর আলোকে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকার ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-১৫) বাস্তবায়ন করছে। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরসহ বিগত চারটি অর্থবছরে সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণে সমন্বিতভাবে কাজ করে আসছে। দেশের দারিদ্র্য দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বিগত মেয়াদে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করি, যা চলতি ২০১৩-১৪ এবং আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে।"
জাতীয় পার্টির এমপি এ কে এম মাইদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বর্তমানে দেশে মোট ২৩৩টি বিদেশি এনজিও কাজ করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ৭০টি, যুক্তরাজ্যভিত্তিক ৩৬টি, জাপানভিত্তিক ১৯টি, অষ্ট্রেলিয়াভিত্তিক ১০টি, বেলজিয়ামভিত্তিক ৩টি, কানাডাভিত্তিক ৮টি, ডেনমার্কভিত্তিক ৫টি, ফিনল্যান্ডভিত্তিক ২টি, ফ্রান্সভিত্তিক ৮টি, জার্মানভিত্তিক ৬টি, হংকংভিত্তিক ২টি, ভারতভিত্তিক ২টি, আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ১টি, ইতালিভিত্তিক ৩টি, কুয়েতভিত্তিক ২টি, নেদারল্যান্ডভিত্তিক ৯টি, নিউজিল্যান্ডভিত্তিক ২টি, নরওয়েভিত্তিক ৪টি, কাতারভিত্তিক ১টি, সৌদি আরবভিত্তিক ৬টি, দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ১১টি, স্পেনভিত্তিক ৪টি, সুদানভিত্তিক ১টি, সুইডেনভিত্তিক ৬টি, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ৯টি, থাইল্যান্ডভিত্তিক ১টি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ২টি এনজিও রয়েছে। এসব এনজিওতে ৩৪২ জন বিদেশি নাগরিক এবং ১৫ হাজার ৮১৫ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।"
তিনি বলেন, "কোনো এনজিও বিদেশি নাগরিক নিয়োগ করতে চাইলে সংস্থার অর্গানোগ্রাম অথবা এনজিও বিষয়ক ব্যুরো অনুমোদিত প্রকল্পে বিদেশি বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা নিয়োগের সংস্থান থাকতে হয়। নিয়োগের শর্তানুযায়ী যথাযথভাবে বিদেশি নিয়োগ করা হয় এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরো ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিয়ে তারা এদেশে কাজ করে।"
শেখ হাসিনা বলেন, "অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি নাগরিকরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। সেক্ষেত্রে তারা কোনো বেতন-ভাতা গ্রহণ করেন না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি নাগরিক সংস্থার প্রধান কার্যালয় যে দেশে অবস্থিত সেই দেশ থেকে বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করেন। প্রকল্পে অর্থের সংস্থান থাকলে বাংলাদেশের চলমান প্রকল্প থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করেন। বিদেশি এনজিওগুলো ক্ষেত্রবিশেষে সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর পদে এবং প্রকল্প কার্যক্রম কেবল বিশেষজ্ঞদের বিদেশ থেকে নিয়োগ করে থাকে।"
সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক জাপান সফরকে অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসু উল্লেখ করে বলেন, তার এই সরকারি সফরের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পে জাপান আগামী ৪-৫ বছরে ৬০০ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত ঋণ সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে।
COMMENTS