দেশে যে হারে পানি দুষণ হচ্ছে আগামী ১০ বছর পর বিশুদ্ধ পানি বলে প্রাণীজগৎ কোনো পানি পাবে না। হিরোশিমা নাগাসাকির পারমানবিক বোমার আঘাতের চেয়েও ভয়াবহ হবে দেশে দুষিত পানির আক্রমণ।
নদ-নদী জলাশয় ও জলাভূমি সংরক্ষণ কর্মশালায় বক্তারা এরকম ভবিষ্যদ্বানী করেন। ২৭ জুলাই সকাল ১০টায় গাজীপুরের ঢাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) পুরকৌশল ভবনের মিলনায়তনে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন গাজীপুর শাখা ও ডুয়েটের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড সাসটেইনিবিলিটি রিসার্চ কর্মশালার আয়োজন করেন। নদীর নাব্যতা ও প্রবাহ ঠিক রাখতে নদীতে বর্জ্য না ফেলার আহবান জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান মোল্লা বলেন, পানি দূষণ, নদী দুষণ হলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি, নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ও মানুষের গড় আয়ু কমে যাওয়াসহ নানা ধরণের জাতীয় সমস্যা দেখা দিবে। কারণ, নদ-নদীর পানি মাটির নিচে গিয়ে পানির স্তরের সাথে মিশে যায়। সেই পানিগুলো আবার বিশুদ্ধ পানি হিসেবে আমরা গ্রহণ করি। একটা সময় আসবে যখন ভূ-স্তরের পানিও দুষিত হয়ে যাবে। তাছাড়া, পানির মাধ্যমে তৈরী হয় এরকম কমপক্ষে ১৭ টি পুষ্টি উপাদান উদ্ভিদ মাটি থেকে গ্রহণ করে। পনির কারণে মাটির পুষ্টি নষ্ট হলে ফসল উৎপাদন কম হবে।
নদীতে বর্জ্য ফেলার অভ্যাস পরিত্যাগ করে নদীর নাব্যতা অটুট রাখতে হবে। নদীর নাব্যতা ঠিক থাকলে নদী সহজেই নিজেকে পরিচ্ছন্ন ও গতিশীল রাখতে পারবে। এটি নদীর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য।
ডুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড.শওকত ওসমান বলেন, আগামী এক বছর কোনো কারখানা মালিক নদীতে কোনোরূপ বর্জ্য না ফেললে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় নদী সেই আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় গাজীপুরের নদীগুলো তাদের অতীত ঐতিহ্যে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি এসময় গাজীপুরের বেলাই বিল, কালিয়াকৈরের মশক বিল, শ্রীপুরের পারুলী নদী, চিলাই নদী, কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা ও টঙ্গীর তুরাগ নদীসহ কয়েকটি নদীর নাম উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন গাজীপুর শাখার সভাপতি মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আলমের পরিচালনায় বক্তব্য দেন ডুয়েটের গণিত বিভাগের প্রধান সিরাজুল হক মোল্লা, পরিবেশ গবেষক সিরাজুম মুনিরা, আব্দুল করিম পাখি, আশরাফুল আলম প্রমূখ।
COMMENTS