বিশ্বকাপ উপলক্ষে জমে উঠেছে ব্রাজিল। সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ছয় লক্ষ পর্যটক ও ফুটবলপ্রেমী গিয়ে আছড়ে পড়েছে ব্রাজিলের মাটিতে। পর্যটক আকর্ষণে দেশটির হোটেল, রেস্তোরা, সমুদ্র সৈকত থেকে পর্যটন কেন্দ্রগুলোও সেজেছে বর্ণিল সাজে। সেই সঙ্গে বসে নেই দেশটির যৌনকর্মীরা।
ব্রাজিলে যৌন ব্যবসা একটি বৈধ পেশা। তাই পর্যটক আকর্ষণে ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ভাষা শেখার পাশাপাশি, নাচ, গান, সাঁতার, সমুদ্রস্নান, ফুটবল নিয়ে হট অঙ্গভঙ্গি, ভারতীয়কামসূত্র শিখে পুরোদস্তুর 'বাণিজ্যিক স্মার্ট' বনে গেছে দেশটির প্রায় ১৫ লক্ষ যৌনকর্মী। এজন্য প্রায় আট মাস বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নেয় তারা।
দেশটির সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে যৌনকর্মীদের। তবে শিশু যৌনকর্মী নিয়ে বিতর্কে পড়েছে বিশ্বকাপ আয়োজক দেশটির সরকার। সেখানে ১৫ লাখ যৌন কর্মীর ৫ লাখই শিশু যাদের অনেকের বয়স ৮ বছরের নিচে।
এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি যেমন হচ্ছে তেমনি সোচ্চার নানা এনজিও। সরকারও বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া 'যৌবন ক্রেতা' পর্যটকদের প্রথম পছন্দই শিশু যৌনকর্মী। তাই অনেকক্ষেত্রে পরিবারের লোকজনই নিজের সন্তানকে ঠেলে দিচ্ছে যৌন পেশায়।
ডেইলি মিরর'র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদকের সহজলভ্যতা আর দারিদ্রের কারণে ব্রাজিলে মেয়েরা শিশু বয়সেই যৌন ব্যবসায় নেমে যাচ্ছে।
পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার ক্ষেত্রে এটাই তাদের কাছে সবচেয়ে সহজ পথ। এছাড়া এসব শিশু যৌনকর্মীরা তাদের শারিরীক কষ্ট ভুলতে মাদকের শরণাপন্ন হচ্ছে। ফের মাদকের টাকা জোগাড় করতে বেশি বেশি খদ্দেরের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে হচ্ছে।
এদিকে বিশ্বকাপ শুরুর বেশ আগে থেকেই শিশু যৌন ব্যবসা নিয়ে ব্রাজিল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর তোলে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
দেশটির আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচে কারও সঙ্গে যৌনকাজে লিপ্ত হলে তার ৬ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আবার ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কারও সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হলে তার ১ থেকে ৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে এ বিধান অধিকাংশ সময়েই মানা হয় না। সম্প্রতি ১২ বছর বয়সী তিনজন মেয়েকে কয়েকজন জোরপূর্বক ধর্ষণ করলেও মেয়েগুলো যৌনকর্মী হওয়ায় আদালত বিষয়টিকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করেনি।
COMMENTS