রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশ থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়কে শেরে বাংলানগরে স্থানান্তর নিয়ে আলোচনার সময় এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এক অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ওই জায়গা যদি সচিবালয়ের জন্য নির্ধারিত থাকে এবং সবাই যদি একমত পোষণ করেন। তাহলে মাজার সরানো যেতে পারে।
এ সময় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়ার মাজার প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে নেওয়া যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে বৈঠকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, লুই আই কান যে নকশা করেছিলেন, সেই নকশায় জিয়াউর রহমানের মাজারের জন্য আলাদা জায়গা ছিল না। সেখানে সচিবালয় করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সেখানে জিয়াউর রহমানের মাজার করা হয়েছে। এর ফলে ক্রিসেন্ট লেকের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বার্থে সবাই যদি একমত পোষণ করেন এবং ওটা যদি সচিবালয়ের জন্য নির্ধারিত থাকে, তাহলে মাজার সরানো যেতে পারে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেছেন, ওখানে আসলে জায়গাটা খালি ছিল। সেখানে মাজার করার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। নিয়ম না মেনেই এই মাজার করা হয়েছে।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষের সেবা বাড়াতে এবং সরকারি অফিস করার স্বার্থে জিয়াউর রহমানের মাজার ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। আর ওই জায়গায় সচিবালয় স্থানান্তর করলে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে সংসদ ভবন, পরিকল্পনা কমিশন, নির্বাচন কমিশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ আরও অনেক সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। অনেক আগেই শেরে বাংলা নগর এলাকায় সচিবালয় স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়নি।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, সভায় ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার সাত কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৯৯৭ কোটি টাকা। বাকি এক হাজার ১০ কোটি টাকার জোগান আসবে বৈদেশিক ঋণ থেকে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ, ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা অন্যতম।
সূত্র: কালের কণ্ঠ।
COMMENTS