রেজাউল কবির রাজিবঃ টঙ্গীতে নিম্নমানের বেকারী সামগ্রী, ব্রেড, মজাদার টোস্ট, চানাচুর ও কেকসহ বিভিন্ন মজাদার খাদ্য প্রকাশ্যে তৈরী ও বাজারজাত করা হচ্ছে। জেলার টঙ্গী, স্টেশন রোড, মধুমিতা রোড, গাজীপুর সদরসহ বিভিন্ন বেকারী দোকান গুলো ছাড়াও পান দোকান গুলোতেও রং বেরঙের এ সব বেকারী সামগ্রী শিশুদের ,স্কুলগামী ছাত্র/ছাত্রীদের আকৃষ্ট করে তা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে। এসব খেয়ে কোমলমতী শিশুরা ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিভিন্ন কেক চানাচুরসহ বিভিন্ন বেকারী সামগ্রীর গায়ে হাফিজ বেকারী, আলামিন বেকারী, মায়ের দোয়া বেকারী লেখা থাকলেও তাতে কোন সঠিক ঠিকানা নেই। বিএসটিআই ও ম্যানুফেকচার ডেট থাকলেও কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া সরকারী রেজিঃ বিহীন এসব সামগ্রী কিভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় বিক্রি হচ্ছে এটাই জনগণের প্রশ্ন।
টঙ্গীর নামিদামী আল আমিন বেকারির স্বত্বাধিকারী বলেন যে, আমরা পাইকারদের কাছে এসব দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করে থাকি, আসল নকল পরীক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের নয়। সরকার তা কেন তদারকি করেন না। এজন্য সরকার নিজেই দায়ী।
অপর দিকে প্রকৃত বিএসটিআই না থাকলেও অবৈধভাবে যেসব বেকারী গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হাফিজ বেকারী, আলামিন বেকারী, ভাই ভাই বেকারী, মি: বেকার, হাজী ফুডসসহ বিভিন্ন বেকারির ঠিকানা বিহীন ঢাকা বাংলাদেশ বা টঙ্গী গাজীপুর ঠিকানায় বাজারজাত করা হলেও নির্দিষ্ট কোন ঠিকানা নেই আর তা প্রশাসন দেখে না দেখার ভান করে।
এদিকে মিঃ বেকার নামে মধুমিতা রোডে ৪তলা বিশিষ্ট একটি বেকারিতে একাধিক বার সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলেও তিনি কোন তথ্য দিতে নারাজ এবং বেকারিতে ঢুকতেও দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
টঙ্গী চেরাগআলী মার্কেটে হাজী ফুডস বেকারিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বেকারী সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে রয়েছে মাকড়সার বাসা ও স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশ। এব্যাপারে নোংরা পরিবেশের কথা জানতে চাইলে ম্যানেজার আল-আমিন জানায়, কাজ করতে গেলে এ ধরনের পরিবেশ হতে পারে। আপনারা বিকেলে আসলে দেখবেন সব ঠিক।
তেমনি এক বেকারী টঙ্গীর খা পাড়ায় সৌদি মসজিদের পাশে হাফিজ বেকারির মালিকের কাছে তার বেকারির সরকারী বৈধ কাগজের বা বিএসটিআই না থাকলেও সে বিএসটিআই নম্বরসহ সিল ব্যবহার করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিভাবে বাজারজাত করে তার প্রশ্নে তিনি জানান, আমরা বিএসটিআই এর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন আর লোকাল প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই তা বাজারজাত করে থাকি। ডিসি, এসপিসহ ডিবি, এসবি, এনএসআইদেরও ম্যানেজ করি। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকতো আছেই, তাদেরও সপ্তাহে দু’ একশো করে দিয়াই আমরা চলি।
স্থানীয় টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ওয়াদুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে এ রমজান মাস। আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর সামগ্রী প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতাকে আইনের আওতায় এনে কোমল মতি শিশু, আমরা যারা আল্লাহর নামে রোজা নামাজ পড়ি তারাও বেচে যেত। এসব ভেজাল সামগ্রী পরিহার করে তা থেকে দূরে থাকতে হবে।
জেলার সিভিল সার্জন বলেন যে, এসব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী আর ভেজাল তেল ও নকল আটা ময়দা দিয়ে তৈরী এসব সামগ্রী খেলে শিশুদের যেমন ডায়রিয়া, পেটের পিড়াসহ বিভিন্ন ধরনের অসুখ হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি বয়স্কদের ও ডায়বেটিকস আর প্রেসারের ঝুঁকি বিদ্যমান। আমরা জনসচেতনতামূলক অনেক প্রোগ্রাম করলেও তা আমরা আমলে না নেয়ার কারনেই এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় সরকারী অনুমতি বিহীন এসব সামগ্রী না খাওয়াই ভাল।
এব্যাপারে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান এলাকার সচেতন মহল।