সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন বেলো হরিজান্তের দিকে৷ একদিকে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি৷ আবার অন্যদিকে বদলা৷ সব মিলিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে জমজমাট ফুটবল দেখার অপেক্ষায় রয়েছে তামাম ফুটবল দুনিয়া৷ টান-টান উত্তেজনায় ফুটছে সারাবিশ্ব। এমন হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল ম্যাচের মুখোমুখি হওয়ার আগে দুটো দলই চাঙ্গা হয়ে রয়েছে৷ দুটো দলই ফুটছে দুরন্ত ফুটবল মেলে ধরার জন্য৷ জোয়াকিম লো-র দল চাইছে হারের বদলা নিতে৷ আবার লুই ফিলিপ স্কোলারির দল চাইছে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে৷
২০০২ সালের ৩০ জুন জাপান বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ৷ অলিভার কানের দলকে দু’গোলে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল ৷ এক যুগ পরে বিশ্বকাপের আসরে ফের মুখোমুখি জার্মানি-ব্রাজিল ৷ এবার অবশ্য ফাইনাল নয়, সেমিফাইনালে মুখোমুখি দুই দল ৷ জার্মানি কী পারবে সেই হারের বদলা নিতে ? নাকি ব্রাজিল সেই চিরন্তনী সম্মোহনী ফুটবল খেলে জার্মানিকে শোক সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে ?
এমন একটি হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার আগে কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন স্কোলারি৷ তার দলের প্রধান অস্ত্র নেইমারকে পাচ্ছেন না তিনি৷কলম্বিয়া ম্যাচে আহত হওয়ার পরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছেন ব্রাজিলের সুপারস্টার৷ দলের আক্রমণভাগের প্রধান অস্ত্র নেইমারের পাশাপাশি দলের রক্ষণভাগের সেনাপতি অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাকেও পাচ্ছেন না ব্রাজিলের কোচ৷ দুটো হলুদ কার্ড দেখার জন্য সেমিফাইনালে নেই সিলভা৷ অধিনায়ককে যাতে খেলতে দেয়া হয় তার জন্য আবেদনও করেছে ব্রাজিলের কনফেডারেশন৷
নেইমারের পরিবর্তে মিডফিল্ডার উইলিয়ানকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কোলারি৷ যদিও ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি তিনি৷ কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে যে দলটি খেলেছিল সেই দলে নেইমার ছাড়াও মাঝমাঠে কিছু পরিবর্তন করতে চলেছেন স্কোলারি৷ ব্রাজিল ঘরের মাঠে খেলবে সেক্ষেত্রে তারা বাড়তি সুবিধা পাবে সন্দেহ নেই৷ তবে নিজেদের দর্শকদের সামনে খেলাও বাড়তি চাপ বলে মনে করছে ব্রাজিলের টিম ম্যানেজমেন্ট৷ কোনও অঘটন ঘটলে ওই সমর্থকরাই বিক্ষোভে ফেটে পড়বে তাই সতর্ক স্কোলারি৷
এদিকে জার্মানি ‘স্কোলারির বাড়া ভাতে ছাই’ দিতে তৈরি হয়ে রয়েছে৷ বিশ্বকাপের ইতিহাস তাদের দিকে নেই৷ তবুও ব্রাজিলকে ঘরের মাঠে হারিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে চাইছে জোয়াকিম লো-র দল৷ অস্কার, ফ্রেড, দাভিদ লুইজদের পাওয়ার ফুটবল দিয়েই মাত করতে চায় জার্মানি৷ দলের অন্যতম ভরসা বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার বলেছেন, ‘ব্রাজিলিয়ানরা আগের মতো আর ফুটবল জাদুকর নয়৷ ওদের দলের পরিবর্তন হয়েছে৷ খেলার স্টাইলেও পরিবর্তন হয়েছে৷ আমরা নিজেদের খেলা মেলে ধরব সেমিফাইনালে৷ জেতা ছাড়া আর কিছুই ভাবছি না আমরা৷’
২০০২ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ ছিলেন স্কোলারি৷ সেবারেও বিপক্ষে ছিল জার্মানি৷ কাকতলীয়ভাবে এবারও বিশ্বকাপের আসরে বিপক্ষ জার্মানি৷ এবারও কোচ ব্রাজিলের কোচ স্কোলারি৷ ইতিহাস কাদের হয়ে কথা বলে সেটাই এখন দেখার৷