ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর মহানগরীর কড্ডা বাইমাইল এলাকায় বুধবার ভোরে সিটি করপোরেশনের আবর্জনার স্তূপে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চার ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে টাঙ্গাইলগামী একটি ট্রাক উল্টে পড়ে যায়। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
কোনাবাড়ির সালনা মহাসড়ক পুলিশ থানার ওসি মো. আলমগীর সিদ্দিক জানান, বুধবার ভোর ৪টার দিকে বাইমাইল এলাকায় চার ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। পরে একটি ট্রাক রাস্তার পাশে পড়ে যায় এবং অন্য তিনটি মহাসড়কের ওপর বিকল হয়ে পড়ে। এতে ওই মহাসড়কে যাহবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের রেকার এনে সকাল ৭টার দিকে ট্রাকগুলো সরিয়ে নিলেও যানজট অব্যাহত থাকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এছাড়া বৃষ্টির পানি মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের খানা-খন্দকে জমে থাকার কারণেও মহাসড়কে যানজটের অন্যতম কারণ। বুধবার দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় গাজীপুরের মহাসড়কের ভোগড়া চৌধুরী বাড়ি, চান্দনা-চৌরাস্তা, কোনাবাড়িসহ অনেক স্থানে পানি থৈ থৈ করছে। এতে পানির নিচের মহাসড়কের গর্তে পড়েও অনেক গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে।
গতকাল সকালে চান্দনা-চৌরাস্তা রহমান শপিংমলের সামনে সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ও গর্তে বিকল হয়ে পড়ে গাজীপুর-নবীনগর রুটে চলাচলকারী পলাশ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। এতে গাজীপুর শহরের শিববাড়ি থেকে ঢাকাগামী সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। খানা-খন্দক ও মহাসড়কের আবর্জনার স্তূপ অপসারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগে একাধিকবার চিঠি দিলেও তার সমাধান হয়নি। পরে গাড়িটি সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। যানজট স্বাভাবিক হতে সময় লাগে আরো তিন-চার ঘণ্টা।
গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই মহাসড়কের নিচু স্থানে জমে থাকে হাঁটুপানি। পানি জমে থাকায় সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। কোনাবাড়ি এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় খানাখন্দের। এছাড়া দুইপাশেই জমে রয়েছে পানি। এ সময়ের কারণে যানবাহনগুলো ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী সোহাগ পরিবহনের যাত্রী জহির উদ্দিন জানান, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের চার লেনের উন্নীত করণের কাজ চলছে গত প্রায় এক বছর ধরে। চারলেনের উন্নীতকরণের কাজ বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীরা। কিন্তু নির্মাণকাজের ধীর গতি ও বর্ষাকাল থাকায় উন্নয়ন কাজ হচ্ছে বিলম্বিত। এরই মধ্যে মহাসড়কের চান্দনা-চৌরাস্তা, পোড়াবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নির্মাণকাজ করাকালে দু'লেনের গাড়ি এক লেনে চলাচল করায় এ মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। মাঝে-মধ্যে গাড়ি বিকল হলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহগামী বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার যাত্রী।
গাজীপুর-মির্জাপুর সড়কে চলাচলকারী লেগুনা চালক জাকির হোসেন জানান, গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছোট বড় গর্ত থাকায় মাঝে-মধ্যে গাড়ি বিকল হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন গাড়ির চালকরাও।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা কামাল জানান, ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় মঙ্গলবার থেকে সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা, যানজট ও দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্দক ছাড়াও বোর্ড বাজার, চান্দনা-চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু'পাশে গাজীপুর সিটির ময়লার স্তূপ মহাসড়ককে সংকুচিত করে ফেলেছে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে রাস্তা দখল করে দোকান-পাট গড়ে ওঠায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে শিগগিরই।