ডেস্ক নিউজ: ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪-র বিশ্বকাপকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ বিশ্বকাপ। খেলায় গোল,খেলোয়াড়ের বয়স,নামের বৈচিত্র্য সব কিছু নিয়ে ব্রাজিলে এবার তৈরি হয়েছে নানাধরনের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগের নেটওয়ার্কে এবারের বিশ্বকাপ একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।ফেইসবুক এবং টুইটারে এই বিশ্বকাপ নিয়ে আলাপ ও মন্তব্য রেকর্ড তৈরি করেছে।
নক আউট পর্বে চিলির সঙ্গে ম্যাচে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ব্রাজিলের জয় নিয়ে টুইট হয়েছে ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ। এর মধ্যে পেনাল্টি শ্যুট আউটের নাটকীয় মূহুর্তে যখন চিলির গনযালো জারার পেনাল্টি লক্ষ্যভ্রষ্ট হল,সেই চূড়ান্ত মূহুর্ত নিয়ে টুইট হয়েছিল ৩৮ লক্ষ ৮ হাজার ৯৮৫টি।সামাজিক যোগাযোগের ইতিহাসে এর আগে কোনো একটি বিষয় নিয়ে এত টুইট কখনই হয়নি।
টুইটারে এর আগের দুটি রেকর্ড ছিল ২০১৪-র 'সুপার বোল' প্রতিযোগিতায় প্রতি মিনিটে লেখা ৩৮ লক্ষ দু’হাজার টুইট এবং তার আগে ২০১২ সালে আমেরিকার নির্বাচনের রাতে লেখা ৩২ লক্ষ ৭ হাজার ৪৫২টি টুইটের রেকর্ড।
আর ফেইসবুকে এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে মন্তব্য চালাচালি হয়েছে এক বিলিয়ন। ফেইসবুকের ১০ বছরের ইতিহাসে এ সংখ্যা এই প্রথম এবং একটি রেকর্ড।
গোলের সংখ্যার বিচারে এই বিশ্বকাপ অন্যতম উপভোগ্য একটি বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বেই গোল হয়েছে ১৩৬টি-যা একটি রেকর্ড।
গোলের সংখ্যার দিক দিয়ে আগের রেকর্ড ছিল ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে-সেই সংখ্যা ছিল ১৩০। গোলের এই বন্যা নক আউট পর্বেও অব্যাহত ছিল। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের পল পগবার হেডার থেকে আসে এই বিশ্বকাপের ১৪৬ নম্বর গোলটি। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপে গোটা টুর্নামেন্টে মোট গোলের সংখ্যা ছিল ১৪৫।
খেলোয়াড়ের বয়সেও নতুন রেকর্ড
কলম্বিয়া এবারের বিশ্বকাপে তাদের সবচেয়ে ভাল ফল দেখিয়েছে। এ যাবৎ তাদের চারটি ম্যাচেই তারা জয় পেয়েছে। তাদের বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম কলম্বিয়া কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন তাদের দলের খেলোয়াড়ই সবচেয়ে বয়স্ক। তাদের গোলকিপার ফরিদ মন্দ্রাগনের বয়স ৪৩। এর আগে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় ছিলেন ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার রজার মিলা। ১৯৯৪ সালের টুর্নামেন্টের সময় তাঁর বয়স ছিল ৪২-আর সেটাই ছিল বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড়ের রেকর্ড।
দীর্ঘ নামের রেকর্ড গড়লেন গ্রিসের খেলোয়াড়
কোস্টারিকার কাছে পেনাল্টি শ্যুট আউটে পরাজিত হয়ে ২০১৪-র বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে দু:খজনক বিদায় নিতে হয়েছে গ্রিসকে।কিন্তু তারা এই বিশ্বকাপে একটা রেকর্ড গড়ার সুযোগ পেয়েছেন-সেটা হল খেলোয়াড়ের দীর্ঘতম নামের সুবাদে।
গ্রিসের হয়ে সমতাসূচক গোলটি দেন যে খেলোয়াড় এই রেকর্ড গড়ার সম্মান জুটেছে তার কপালে। তার পুরো নাম সক্রেটিস পাপাসতাথোপুলোস।
তবে নামের বিচারে রেকর্ড শুধু তিনিই করেননি,বিশ্বকাপে এ যাবৎ সবচেয়ে ছোট নামের খেলোয়াড় হিসাবে রেকর্ড করেছেন ব্রাজিলের স্ট্রাইকার ‘জো’।
ঘানার আসামোয়া জ্যান - সর্বাধিক গোল স্কোরার আফ্রিকার ফুটবলার। জ্যান-সর্বাধিক গোলের অধিকারী আফ্রিকান ফুটবলার গ্রুপ পর্বে ঘানার বিদায়ও হতাশাজনক। ঘানার খেলোয়াড়রা বোনাস ও দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেও আফ্রিকান তারকাদের জন্য রয়েছে রেকর্ড গড়ার সুখবরও। ঘানার স্ট্রাইকার ২৮ বছর বয়সের আসামোয়া জ্যান বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোলের অধিকারী আফ্রিকান ফুটবলার।
পর্তুগালের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে ঘানা।ঘানার পক্ষে ওই একটি গোল স্কোর করে বিশ্বকাপে গোলের ঝুলিতে জ্যানের মোট সংগ্রহ হয়েছে ছয়টি গোল। এর আগে ক্যামেরুনের রজার মিলা ছিলেন এই রেকর্ডের অধিকারী। বিশ্বকাপে আফ্রিকান ফুটবলার হিসাবে তার গোলের সংখ্যা ছিল পাঁচ।