জমির অভাবে ছয়টি বিভাগীয় নগর ও একটি জেলায় হাইটেক পার্ক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। জরিপের জন্য বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ছিল ৩০ জুন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই সময়সীমা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে।
মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে পাঠানো ডেপুটি সেক্রেটারি মোহাম্মদ আখতার হোসেনের সই করা চিঠিতে জরিপের সময় ছয় মাস বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়। মন্ত্রণালয় এই জরিপ চালানোর জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং গত অর্থবছরে এ জন্যে ৬৯ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়, যা চলতি অর্থবছরে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আইসিটি বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম খান জানান, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে জমি পাওয়া গেলেও খুলনা, রংপুর ও চট্টগ্রামে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, রংপুর ও খুলনায় টেক্সটাইল মিল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই হাইটেক প্রকল্পের জন্য জমি সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রামের মন্ত্রীরাও হাইটেক পার্ক নির্মাণের জন্য জমির নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাংলাদেশের প্রথম হাইটেক পার্কের জন্য বাড়তি ১০০ একর জমি বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এতে করে ১৫ বছর আগে ১৯৯৯ সালে শুরু হওয়া অসমাপ্ত এই প্রকল্পের জন্য মোট জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৩২ একর। প্রকল্প পরিদর্শনের সময় কাজের ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেই কাজ শেষ হবে বলে জানান জয়।
অন্যদিকে, হাইটেক পার্ক প্রকল্পের কাজ ১৫ বছরেও শেষ না হওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরকার ও বিশ্বব্যাংকের ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকেই দায়ী করেন। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালিয়াকৈর সার্ফেস স্যাটেলাইট স্টেশনে ২৩২ একর জমির ওপর এই পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।
তখন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। পরে, ২০০৪ সালে ওই সময়কার বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সেখানে নতুন আরেকটি প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তাতে জমি অধিগ্রহণ ছাড়া আর কিছুই করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করলেও সংস্থাটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে কাজ ঠিকমতো এগোচ্ছে না। ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, প্রকল্পটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
ওই সময় আন্তর্জাতিক টেন্ডারে সেরা দরদাতা হয়েছিল কুয়ালালামপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কুলিম টেকনোলজি পার্ক করপোরেশন।