তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এবার আওয়ামী লীগকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করার কাজে হাত দিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। এ ব্যাপারে তাঁর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে ডাটাবেজ তৈরি করতে সবার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছে দলটির মাঠ পর্যায়ের তথ্য চেয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ জয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক, প্রচার ও প্রকাশনা এবং দফতর সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। এছাড়া আগামী ১২ জুলাই রংপুর থেকে সাংগঠনিক প্রচারণায় নামছে দলটি। সজীব ওয়াজেদ জয় এতে নেতৃত্ব দেবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আগামী সাড়ে চার বছর পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সরকারের অর্জনগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। বৈঠকে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়, ১২ জুলাই রংপুর সফর দিয়ে দলীয় প্রচার শুরু করা হলেও ডিসেম্বর থেকে পুরোদমে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ।
বক্তব্যের শুরুতে সজীব ওয়াজেদ বলেন, সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ পরিবারকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে চাই। আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছি। এখন থেকে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ পরিবারকে তথ্যপ্রযুক্তির সফল ব্যবহারের মাধ্যমে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে চাই।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগের সব সদস্যের জন্য একটা ডাটাবেজ করা হবে। যেখানে সদস্যদের নাম, ঠিকানা ও পদবি থাকবে। সদস্যদের নাম-পরিচয় বিচ্ছিন্নভাবে না রেখে, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে একটি পয়েন্টে রাখা হবে। যাতে প্রয়োজনে সবার সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা যায়। তিনি বলেন, আওয়ামী পরিবার সবসময় সরকারকে সহযোগিতা করে। সরকারও আওয়ামী পরিবারকে শক্তিশালী করার জন্য ও উন্নয়ন কর্মা-কে চলমান রাখতে তথ্য প্রযুক্তিকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে ব্যাপারে মতামত বিনিময়ের জন্যই সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তিনি বলেন, দলকে শক্তিশালী করতে আমরা মাঠ পর্যায়ের তথ্য নিচ্ছি। সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাব, আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নেব।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আগামী পাঁচ বছরই থাকবে। সরকার সাড়ে পাঁচ বছর ধরে ভালভাবে দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। সবকিছুর বাস্তবায়ন হলে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
আওয়ামী লীগের সব সংসদ সদস্যের ফেসবুক এ্যাকাউন্ট না থাকার বিষয়ে জয় বলেন, দলের মধ্যে যেসব তরুণ ও প্রগতিশীল সংসদ সদস্য আছে, তাঁদের সবারই ফেসবুকে এ্যাকাউন্ট আছে। আর অন্য যাদের নেই তাঁদেরটাও হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আমরা তাঁদের সহযোগিতা করব। মঙ্গলবার গণভবনে তরুণ সংসদ সদস্যদের সঙ্গে সজীব ওয়াজেদের বৈঠকের বিষয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, বেশির ভাগ তরুণ সংসদ সদস্য আমার বয়সী। শুধু নির্বাচনী কাজে নয়, তাঁরা আওয়ামী লীগকে কিভাবে সহযোগিতা করতে পারেন এ বিষয়ে তাঁদের মতামত চেয়েছি। দলকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
জানা গেছে, প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টার এ বৈঠকে সজীব ওয়াজেদ জয় জানতে চান, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে দলকে সহযোগিতা করা যায়। এ সময় প্রায় সব সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নেতা-কর্মীদের নাম, পদবি ও ঠিকানা দিয়ে একটি একক ডাটাবেজ করা যেতে পারে। ২০২১ সালের মধ্যে শুধু সরকারী অফিসগুলো ডিজিটাল করলে হবে না, আওয়ামী লীগকেও করতে হবে। এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, সব নেতার নাম একটি পয়েন্টে নিয়ে আসা হবে। এ জন্য মাঠ পর্যায়ের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈ সিং এমপি, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান এমপি, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।