যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনার পর দ্রুত সময়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভাঙাচোরা, খানাখন্দ ঢেকে দেয়া হয়েছে। অনেক স্থানেই শুধুমাত্র বালি আর খোয়া দিয়ে এসবের আবরণ ঢেকে দেয়ায় ভারি বৃষ্টি হলে ঈদ পর্যন্ত এসব মেরামত কাজ টিকবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন যাত্রী-চালক সবাই। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রতিবছর ঈদে ঘরমুখো মানুষের যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় সড়কে। এবারও খানাখন্দ, কার্পেটিং উঠে যাওয়াতে মহাসড়কে গাড়িগুলো চলে ধীরগতিতে। ঈদে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে গত ক’দিনে গাজীপুরের তিনটি সড়কে ৫ দিন ছুটে এসেছেন যোগাযোগমন্ত্রী। এরপর সড়কে মেরামত কাজও হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সড়ক পরিদর্শনে এসে যোগাযোগমন্ত্রী দাবি করেছেন, গত এক সপ্তাহে আশি ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বুধবারের মাঝে সব কাজ শেষ হবে। এরপরও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছেন যাত্রী-চালকরা। ওই মহাসড়কের গাজীপুর অংশের শালনা থেকে মাওনা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট আরো তীব্র হবার আশঙ্কা করছেন তারা। তবে যানজট কমাতে পুলিশের পাশাপাশি প্রস্তুতিও রয়েছে সড়ক প্রশাসনের।
সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত চার লেনের নির্মাণকাজ চলছে। আবার পুরানো সড়ক জুড়েই সৃষ্টি হয় ভাঙাচোরা, খানাখন্দ। গাজীপুর থেকে টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানেও সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। একই অবস্থা হয়েছিল গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন অংশের। যোগাযোগমন্ত্রীর নির্দেশে চান্দনা ও চন্দ্রা মোড়ের প্রশস্তকরণ ও মহাসড়কের খানাখন্দ মেরামত কাজ চলছে গত ক’দিন ধরে। অনেক স্থানেই দেখা গেছে, শুধুমাত্র বালি আর খোয়া দিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। যেনতেন ভাবে আবরণ দিয়ে সমান করা হচ্ছে খানাখন্দ। এসব দেখেই যাত্রী সাধারণের আশঙ্কা নাকাল হবেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। তাদের অনেকেই বলছেন, সড়কের যে অবস্থা আর কাজের যে গতি তাতে রাত-দিন কাজ করলেও ঈদের আগে সড়ক পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না। তারা বলছেন, মহনগরের সালনা থেকে মাওনা পর্যন্ত যানজট তীব্র হবে।
চালকরা বলছেন, জোড়াতালি দিয়ে খানাখন্দ ঢেকে দেয়া এই সড়ক যানজট নিরসনে খুব একটা কাজে আসবে না। তাদের ধারণা, বৃষ্টি হলে সড়কের আসল চিত্র আবারো বেরিয়ে আসবে আর বাড়বে এর ভয়াবহতা। একই ধরনের মেরামত কাজ হওয়ায় যানজটের আশঙ্কা রয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি-শফিপুর-চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর পর্যন্ত। তবে যানজট মুক্ত থাকার ব্যাপারে আশাবাদী গাজীপুর সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাগণ। গাজীপুর সওজের নির্বাহী কর্মকর্তা মহিবুল হক বলছেন, মেরামতের পর জেলার সব সড়ক এখন চলাচলের উপযুক্ত। সমস্যা হলে ঈদের দিনও কাজ করতে প্রস্তুত আছেন তারা। ঈদে বাড়তি যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে অতিরিক্ত যানজট নিরসনে পুলিশ প্রশাসনের রয়েছে নানা প্রস্তুতি। গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে সার্বক্ষণিক ভাবে সড়কে দায়িত্ব পালন করবেন তারা। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর অংশের টঙ্গী ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা, রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা, মাওনা চৌরাস্তা ও কোনাবাড়ি, শফিপুর, চন্দ্রা মোড়সহ ১০-১২টি পয়েন্টে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। যানজট নিরসনে কর্তৃপক্ষের বিশেষ উদ্যোগ থাকলেও চালক-যাত্রীদের প্রতিবছরই থাকে নানা অভিযোগ। অভিযোগের ঊর্ধ্বে ওঠে এবার ঈদের আগে সবাই যানজট নিরসনে তৎপর হবেন- এমনটাই সবার আশা।