অবশেষে ৩৩ বছর পর দখলমুক্ত হলো উপমহাদেশের বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি। বুধবার বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আরা রিমির নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা ওই বাড়ির মূল ফটক ও প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বাড়িতে ইমাম গাজ্জালী ইনস্টিটিউট নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিল স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী।
বাড়িটি দখলমুক্ত করতে প্রশাসন দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসলেও আইনি জটিলতায় তা বার বার বাধাগ্রস্থ হয়।
পরিশেষে গত ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে বাড়িটি দখলমুক্ত করায় কোনো বাধা আর থাকে না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্ট অবিলম্বে সুচিত্রা সেনের বাড়িটি দখলমুক্ত করার নির্দেশে দেন। মঙ্গলবার এই রায়ের কপি পাবনা জেলা প্রশাসনের হাতে এসে পৌঁছায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জামায়াতের লোকজন ও ইমাম গাজ্জালী ইনস্টিটিউটের লোকজন রাতেই তাদের মালপত্র অনত্র সরিয়ে নেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আরা রিমি জানান, রায় অনুযায়ী বাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে দখলমুক্ত করা হয়েছে।
পাবনার সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. রাম দুলাল ভৌমিক জানান, পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের এই বাড়িতেই কেটেছে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের শৈশব ও কৈশোর। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সপরিবারে পশ্চিম বাংলায় পাড়ি জমান তার বাবা করুনাময় দাশগুপ্ত। তিনি পাবনা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ছিলেন।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের জন্য বাড়িটি রিক্যুইজিশন করে।
১৯৮৭ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসন থেকে বাড়িটি বাৎসরিক চুক্তি ভিত্তিতে ইজারা নেন জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতারা। জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহান অর্পিত সম্পত্তিতে পরিণত করে ইমাম গাজ্জালি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাড়িটি দখলের চেষ্টা চালান।