গাজীপুরে গড়ে ওঠা শিল্প কারখানার কঠিন ও তরল রাসায়নিক বর্জ্যে দিন দিন বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে তুরাগ নদ। আর কঠিন বর্জ্যের কারণে নদের তলদেশ ভরাট হয়ে পরিণত হচ্ছে খালে। এদিকে, দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এক স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল বলেন, এক সময় এ পানিতে আমরা গোসল করতাম, পানি পান করতাম। কিন্তু বর্তমানে এ পানির দুর্গন্ধে এর ধার দিয়ে চলাফেরা করা যায় না।
এভাবে গাজীপুর-টাঙ্গাইল অঞ্চলের অন্যতম নদী তুরাগের বর্তমান অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা।
এক সময়কার উত্তাল খরস্রোতা তুরাগ নদী এখন বিলীনের পথে। আর এজন্য কারখানগুলোর শিল্প বর্জ্য পরিশোধনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন এখানকার মানুষ।
টঙ্গীসহ পুরো গাজীপুরে গড়ে উঠেছে প্রায় তিন হাজার শিল্প কারখানা। এরমধ্যে ২৮৭টি কারখানায় ইটিপি প্ল্যান্ট থাকলেও তার ব্যবহার খুব কমই। ফলে এখানকার তরল ও কঠিন বর্জ্য সরাসরি গিয়ে পড়ছে নদীতে। শুধু শিল্প কারখানাই নয় গাজীপুরে পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় গৃহস্থালির আবর্জনাও তুরাগ নদীকে দূষিত করছে।
স্থানীরা অভিযোগ করে বলেন, "খাওয়ার পানি, রান্নার পানি, গোসলের পানির সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। যদি সরকার এসব দিকের দিকে একটু নজর দিতো তাহলে এ সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেতাম।"
প্রভাবশালী একটি মহল নদী রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হতে দেয় না বলে অভিযোগ করেছেন পরিবেশবিদরা।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় নেতা মো. কালিমুল্ল্যাহ ইকবাল বলেন, "বজ্য পদার্থের কারণে দেখা যায় আবাদি জমিতে ভাল ফলন হচ্ছে না। এতে মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। আর ইটিপি প্ল্যান্ট থাকার সত্ত্বেও কোনো কার্যকর কাজ করা হচ্ছে না।"
এদিকে নদী দূষণ রোধে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়ার কথা জানালেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সনিয়া সুলতানা।
গাজীপুরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদীকে বিভিন্ন শিল্প কারখানার ১৫ লাখ ঘনমিটারের বেশি অপরিশোধিত কঠিন ও তরল বর্জ্য দূষিত করছে।