সরকারি চাকরিজীবী ৩৫ জনের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট ও সনদ বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সোমবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
মুক্তিযোদ্ধা গেজেট ও সনদ বাতিল হওয়াদের মধ্যে রয়েছে উপ-সচিব, রেলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক, ব্যাংক ও রাজস্ব কর্মকর্তা, শিক্ষক, পুলিশ।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা না তারা কেন সেটা দাবি করবেন? অতীতের মতো ভুলের যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে আমরা সচেতন আছি।
এতদিন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা প্রতারণার সামিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আর্থিক সুবিধা ফেরত নেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার জন্য বলা হবে।
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি আর আমরা রাখব না।
রুলস অব বিজনেস এর ১৯৯৬ সিডিউল-১ (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) এর তালিকা ৪১ এর ৬ নং ক্রমিক ক্ষমতাবলে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সলিমুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
বাতিল করাদের মধ্যে ৩০ জনকে এনএসআই ও ২ জনকে জেলা প্রশাসক এর প্রতিবেদন, ২ জনের উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় এবং ১ জনের দুইটি সনদ থাকায় গেজেট ও সনদ বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এনএসআই ও জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গেজেট বাতিল করা ৩২ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের স্বপক্ষে কোন গ্রহণযোগ্য দালিলিক প্রমাণাদি বা কোন গ্রহণযোগ্য তথ্য দিতে না পারায় তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা দাবির বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২ জনের বয়স মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার মত উপযুক্ত না হওয়ায় গেজেট বাতিল করা হয়।
অপর ১ জন দুইটি সনদ গ্রহণ করায় একটির গেজেট বাতিল করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে ১১৬ জনের গেজেট ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়েছে বলে জানায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনটি গেজেটে প্রকাশের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
যাদের সনদ বাতিল হল :
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ মো. শাফিয়ার রহমান ও মো. আব্দুল ওয়ারেছ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ মো. আব্দুল হালিম এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আজহার আলী খানের সনদ বাতিল হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন আ ন ম বজলুল রশীদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন এটিএম শাহজাহান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মো. দানেশ মিয়ার সনদও বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মো. আব্বাস আলী খান, ঢাকা ভ্যাট কমিশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (পিআরএল ভোগরত) শেখ মাহবুবুল আলম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন রনজিৎ কুমার রায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মো. শফিকুল হক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মো. রওশন আলম, মো. আবু হোসেন মিয়া, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন এ কে এম জালাল ও হাশেম আলীর গেজেট বাতিল করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ মো. মজিবুর রহমান ও এ কে এম হাবিবুল্লাহ, ওএসডি উপ-সচিব শেখ আলাউদ্দিন; মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সোলায়মান চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন পটুয়াখালী দপ্তরের (বিধি) সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুর রশিদ হাওলাদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ মো. জয়নাল আবেদীন, কে এ নিজাহার উদ্দীন খান, কর অঞ্চল-২ এর মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. নুরুন্নবী পাটোয়ারী, যমুনা ওয়েল কোম্পানীর সাবেক ম্যানেজার মো. গোলাম রব মোল্লা, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা অফিসের মো. আবুল হোসেনের সনদ বাতিল হয়েছে।
এছাড়াও বাতিল করা হয় সোনালী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার এটিএম আব্দুল হাই, পুলিশ (বেতার) মো. সোলায়মান বিশ্বাস, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মো. হারুন অর রশীদ খান, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মো. শাহযাদ আযীম, এম এ মজিদ, মো. নূর ইসলাম, মো. বেলাল হোসেন ও মো. আব্দুল মালেকের সনদ।