এম. এ. কবির/গাজীপুর অনলাইনঃ দেশের অখ্যাত আন্ডার গ্রাউন্ডের কিংবা অনলাইন পত্রিকা ও নামে বেনামে বিভিন্ন পত্রিকার ভূয়া সাংবাদিক ও জাতীয় মানবাধিকার কর্মীদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে গাজীপুরবাসী। এদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হচ্ছে সরকারি, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের, বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণ। এরা তিলকে তাল বানিয়ে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
গাজীপুরের সম্প্রতি ভূয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে আশংকাজনক হারে। এরা আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা, অখ্যাত অনলাইন পত্রিকা, জাতীয় মানবাধিকার এর বিভিন্ন নামের সংস্থা (হিউম্যান রাইটস) কিংবা নামধারী সর্বস্ব পত্রিকার কার্ড গলায় ঝুলিয়ে কোমরে ক্যামেরা সাঁটিয়ে সারাদিন ভূমি অফিস, শিক্ষা অফিস, সাব-রেজিস্ট্রী অফিস, থানা ও হাসপাতালে তদবির বানিজ্য করে বেড়ায়। আবার অনেকের কাছে ৩/৪টি পত্রিকার কার্ড ও জাতীয় মানবাধিকার কার্ড রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় সম্পাদক নামধারী গডফাদার প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডী না পেরোনো পতিতাদের ব্যবহার করছে কাঙ্খিত শিকার ধরতে। এরা গাজীপুরের প্রশাসনের খবরদারি এড়াতে ঢাকা থেকে অনুমোদিত পত্রিকার মালিককে কমিশন দেয়ার শর্তে গাজীপুরে খুপরিঘর টাইপের পত্রিকার বানিজ্যিক অফিস খুলে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজি, ধান্ধাবাজিসহ নানা অপকর্ম।
জেলার বিভিন্ন স্পটে গিয়ে কার্ড দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগে চাঁদা দাবী করে থাকে। আবার কিছু মৌসুমী সিজনাল সাংবাদিক রয়েছে যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী দলের পোষ্ট পজিশন হোল্ডকারী আন্ডারগ্রাউন্ড নেতা, হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী, ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী পত্রিকার কার্ড এনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজী করে থাকে। যাদের নাকি মানুষের ৫টি মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই, তারাই হলো সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী। এরা মোটরসাইকেলে নম্বরপ্লেট না লাগিয়ে সামনে পিছনে সাংবাদিক ও মানবাধিকারের স্টীকার লাগিয়ে সারা জেলা দাপিয়ে বেড়ায়। ষ্টিকার লাগানো থাকে বিধায় অবৈধ মোটরসাইকেল হলেও পুলিশের কাছ থেকে রেহাই পেয়ে যায় এবং অনেকেরই কোন পরিচয় পত্রের কার্ড নেই। অথচ মোটরসাইকেলের সামনে পিছনে সাংবাদিক ও জাতীয় মানবাধিকার কর্মীর ষ্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এরা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে বড় পত্রিকার নাম বলে পরিচয় পর্ব শুরু করে। পরে ইংরেজীতে কিছু কথা বলার চেষ্টা করে যা অধিকাংশ ভুল ও পূর্বের মুখস্ত করা শব্দ। এমনকি শুদ্ধ বাংলাও বলতে পারে না।
অনেক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করে থাকে। কিন্তু এমন পত্রিকার কার্ড নিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেয় তা বাংলাদেশে কোথাও ঐ নামের পত্রিকা ছাপা হয় না এবং পরিচয়ধারী সাংবাদিকরা নিউজ লিখতে পারে না। এদের কারণে প্রকৃত পেশাদারী সংবাদকর্মীরা প্রতিনিয়ত বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। এরা সাংবাদিকতার মহান পেশাকে কলুষিত করেছে। গাজীপুরবাসী ভূয়া নামধারী অপসাংবাদিকদের কাছ থেকে মুক্তি চায়।
প্রতিবেদকঃ
প্রকাশক ও সম্পাদক, গাজীপুর অনলাইন
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাব, গাজীপুর জেলা শাখা।
COMMENTS