‘ঘুম পাড়ানী মাসি- পিসি মোদের বাড়ি এসো/বাটাভরে পান দিবো গাল ভরে খেয়ো/যাবার কালে খোকার চোখে ঘুম দিয়ে যেও’। শিশুদের ঘুম পাড়াতে এই ছড়া বাংলাদেশের মা-খালারা শুনিয়ে থাকেন। মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর শৈশবে তার মা-খালারা তাকে ঘুম পাড়াতে এ ছড়া শুনিয়েছিলেন কিনা, তা এখন আর জানার উপায় নেই। তবে ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসি মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর দু’চোখের পাতায় যেন স্থায়ী আসন গেড়ে বসে আছে। একটু ফুসরত পেলেই তিনি নিদ্রা দেবীর কোলে নিঃশর্ত আত্মসমর্পন করেন। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হলেও মন্ত্রী মহোদয়ের কোন বিকার নেই। পাশাপাশি নিদ্রাদেবীও যেন তার পিছু ছাড়ছে না।
সভামঞ্চে সবার সামনে মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী নিদ্রার কোলে ঢলে পড়া সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে সোমবার বিকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে ১৫ অগাস্ট শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ আয়োজিত একটি আলোচনা সভায়। পুরো অনুষ্ঠানটি তিনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পার করেন।
৩২ নম্বর সড়কে ঢোকার মুখে দক্ষিণ দিকে খোলা জায়গায় সামিয়ানা টাঙিয়ে বিকাল সাড়ে তিনটার কিছু পরে সভা শুরু হয়।
মন্ত্রী মহসীন আসেন ৪টা ৫০ মিনিটে। এরপর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আকরাম ও সভাপতি বজলুর রহমান বক্তব্য দেন।
মহসীন আলী সভামঞ্চে আসন গ্রহণ করার কয়েক মিনিট পরই ঘুমাতে শুরু করেন। আধাঘণ্টা পরে ঘুম থেকে জেগে পানি খেয়ে আবার ঘুমান। কখনো ডান হাত কপালে দিয়ে ঘুমাতে দেখা যায় তাকে। নেতাদের বক্তব্য চলাকালে মাঝে মধ্যে তিনি হকচকিয়ে ওঠে এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার ঘুমাতে থাকেন।
সাংবাদিক ও উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা মন্ত্রীর ঘুমানোর দৃশ্য মোবাইল ফোন ও ক্যামেরায় ধারণ করেন।
৬টা ২০ মিনিটে বক্তব্য দেয়ার জন্য মহসীন আলীর নাম ঘোষণা করা হয়। এসময় তার ব্যক্তিগত সহকারী ছুটে এসে তাকে ডেকে তোলেন। ঘুম থেকে জেগে বক্তব্য দিতে যান মহসীন আলী।
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার কিছুদিন পরই শিশুদের একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসে ধূমপান করে সংবাদ শিরোনাম হন মহসীন আলী। পরে এজন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করে বক্তব্য দেন। সম্প্রতি সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে আবারো সংবাদে আসেন এই মন্ত্রী।
এ ঘটনার জন্যও ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।