গাজীপুর অনলাইনঃ প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার জন্য আলাদা আলাদা চিন্তা না করে অভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। রবিবার ‘আর্টিকেল ১৯’ আয়োজিত ‘জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা ২০১৪: উদ্বেগ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার বলেন, ২০১৪ সালে যখন আমরা একটি সমপ্রচার নীতিমালার কথা বলছি, তখন প্রযুক্তি আমাদেরকে ভিন্ন একটি জায়গায় নিয়ে এসেছে। এ সময়ে আমরা মিডিয়া বলতে সামগ্রিকভাবে যাকে বুঝি, তার জন্য একটি নীতিমালার কথা বলছি কি-না?
তিনি বলেন, আলাদা নীতিমালা কেন? তার মানে কাগজে কাউকে আমি গালি দিতে পারব, কিন্তু অনলাইনে পারব না? কাগজের পত্রিকার জন্য ওয়েজ বোর্ড আছে। টিভি সাংবাদিকের জন্য নেই কেন? ভবিষ্যতে অনলাইন সাংবাদিকতা যারা করবে, তাদের জন্য কেন থাকবে না? কাগজের পত্রিকার জন্য যদি প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট থাকে, তাহলে টিভির জন্য সমপ্রচার আইন খুঁজে বেড়াচ্ছি কেন?
এজন্যই আমাদের উচিৎ- একটি জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করা। পরে সেই আলোকে বাকি কাজগুলো করা।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, আমি মনে করি, সামগ্রিকভাবে মিডিয়ার জন্য একটি কমন প্ল্যাটফর্ম দরকার। তাই সমপ্রচার কমিশন নয়, গণমাধ্যম কমিশন হওয়া উচিৎ। এটা করা হলে কমিশনের কাছে কাগজ-টিভি সবার বিষয়ে যেতে পারব।
“একটি নীতিমালা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। অনলাইনের আরেকটি নীতিমালার খসড়া মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে।”
সমপ্রচার ও অনলাইন উভয় নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন কমিটির এ সদস্য বলেন, আমাকে যখন বলা হলো- কমিটি অনলাইন নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করবে। আমি বললাম, আমার কাজ সহজ হবে।
মোস্তফা জব্বার বলেন, সমপ্রচার নীতিমালা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আমরা কি আইসিটি এ্যাক্ট নিয়ে কথা বলেছি? এ আইনে কি পরিমাণ কণ্ঠরোধ করা হয়েছে, সেটা সম্পর্কে কি আমরা সচেতন? আমরা কি আদৌ ৭৩ সালের প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট আছে, সেটা সম্পর্কে কোনো কথা বলেছি? সেই আইন যে আমার গলা টিপে ধরে রেখেছে, সেই আইন সম্পর্কে বলিনি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের জন্য ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে একটি নীতিমালা, একটি কমিশন, একটি আইন করতে পারি। একইসঙ্গে আমি মনে করি, গণমাধ্যম আইন করে প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্টটা বাতিল করে দেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, গণমাধ্যম নীতিমালার দাবিটি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন থেকে আমরা বলেছি। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- আমরা এটা চাই। এর সঙ্গে আমরা একমত।
তিনি বলেন, সমপ্রচার নীতিমালাসহ আলাদা আলাদা নীতিমালা কনফ্লিক্টিং হবে। অনলাইন নীতিমালার খসড়া পড়ে আছে। আরো দুটি ড্রাফট পড়ে আছে। একটি হলো ১৯৭৪’র নিউজ পেপার সার্ভিসেস এ্যাক্ট যেটাতে কেবল সংবাদপত্রের কর্মচারীদের বিষয় ছিল। সেখানে ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ঢুকানো হয়েছে।
‘আর্টিকেল ১৯’র বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক তাহমিনা রহমানের সঞ্চালনায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া, ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক কামরুল আহসান মঞ্জু, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আলোচনায় অংশ নেন।