হার্ট সুস্থ রাখতে জেনে নিন ৩০ কৌশল

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে মস্তিষ্ক এবং হৃৎপিণ্ড বা হার্টকে নিয়েই ভাবনা থাকে বেশি। এর যেকোনো একটি বিকল হলে মহাবিপর্যয় নেমে আসে। রোগ বিবেচনায় অবশ্য হার্টকে নিয়েই বেশি ভয়। তাই হার্ট সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে চলছে নানা ধরনের গবেষণা। শত শত বছর ধরে চলা এসব গবেষণা উপায়ও বাতলে দিয়েছে অনেক। এর মধ্যে ৩০টি উপায় জানিয়েছে মেনস হেলথ ডটকম।

১. সপ্তাহে দুইবার শারীরিক সম্পর্ক: গবেষণায় দেখা গেছে, স্ত্রীর সঙ্গে যারা মাসে একবার শারীরিক সম্পর্ক করে থাকেন তাদের তুলনায় যারা সপ্তাহে দুই বা তার বেশিবার করেন তাদের হার্ট বেশি সুস্থ থাকে। আমেরিকান জার্নাল অব কার্ডিওলজির মতে, শারীরিক সম্পর্ক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াকে নিরাপদ করে তোলে, যেভাবে পোশাক তাপমাত্রার হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

২. প্রতিদিন এক কাপ আখরোট: প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ আখরোট-জাতীয় ফল খেলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনপ্রক্রিয়া কার্যকর হয়ে ওঠে। কেননা আখরোট-জাতীয় ফলে থাকে ওমেগা-৩ নামের চর্বি, যা বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নেয় এবং এর ফলে দূষিত রক্ত নিয়মিত পরিসঞ্চালিত হয়ে হার্টের গতি স্বাভাবিক রাখে।

৩. নাড়ির গতি লিপিবদ্ধ রাখুন: ঘুম থেকে ওঠার পর অন্য কিছু খোঁজার আগে আপনার প্রয়োজন নিজের নাড়ি মেপে রাখা। কারণ এ সময় শরীর আবারো পুরোমাত্রায় কার্যক্ষম হয়ে ওঠার প্রস্তুতি শুরু করে। তাই হার্টও হয়ে ওঠে সচল। স্বাভাবিকভাবে পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের এ সময় নাড়ির গতি হবে মিনিটে ৭০ বার বা তার চেয়ে কম। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, যদি সপ্তাহ ধরে এর ব্যত্যয় ঘটে, তবে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে স্থানীয় হাসপাতালে।

৪. এড়িয়ে চলুন দূষিত বায়ু: সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে দূষিত বায়ুর পরিমাণ বেড়েছে। আবহাওয়াবিদদের ভাষ্য মতে, শীতকালে সকালের দিকে বাতাসে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। সাধারণত বাতাসে থাকা অতিরিক্ত ধাতব পদার্থ নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে স্কন্ধদেশের ধমনিপ্রাচীরকে আরো পুরু করে তোলে, যে কারণে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়।

৫. বেশি খান শিম, বরবটি: আলু কিংবা কলাই-জাতীয় খাবারের চেয়েও গুটিযুক্ত ফলধারী লতা, যেমন- শিম, বরবটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এগুলো রাখতে পারেন ওষুধ বিবেচনায়ও।

৬. করুন মুঠোর ব্যায়াম: টানা চার সপ্তাহের মুঠো সঞ্চালন-প্রসারণ ব্যায়ামও আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে। হাইপারটেনশন জার্নাল জানিয়েছে, এর মাধ্যমে আপনি রক্তের ঊর্ধ্বচাপ কমিয়ে আনতে পারেন প্রায় ১০ শতাংশ হারে।

৭. ডিমও সঙ্গী হবে: যারা বলছেন, বেশি বেশি ডিম খেলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে তাদের জন্য দুঃসংবাদ। কেননা ব্রাজিলীয় গবেষকরা জানিয়েছেন, ডিমের কুসুমে থাকা ভিটামিন ই, বি-১২ এবং ফলেট করোনারি আর্টারিকে পরিষ্কার রাখে। তবে কেউ যদি দিনে চারটি করে ডিম খেতে থাকেন, তবে তাকে এসব গবেষণার কথা ভুলে যেতে হবে।

৮. দৌড়ান নিয়মিত: এটা একটা সাধারণ তরিকা। তবে হার্ট ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন কিলোমিটার করে দৌড়ানোর উপদেশ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে দৌড় শুরুর আগে এবং শেষে হার্ট রেটের সংখ্যা লিপিবদ্ধ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

৯. শ্বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করুন: না, নিজের ইচ্ছামতো গতিতে শ্বাস নিতে কিংবা ছাড়তে বলা হচ্ছে না। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন শ্বাসের ব্যায়াম করুন। উদাহরণ হিসেবে প্রথমে ৩০ সেকেন্ডে ছয়টি পূর্ণাঙ্গ শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পন্ন করুন। এরপর সময়ের পরিমাণ কমাতে থাকুন। এ ব্যায়াম আপনার হৃদ সংকোচনসংক্রান্ত চাপ কমাতে ধন্বন্তরি ভূমিকা রাখবে।

১০. দূরে থাক অবসাদ: কোনোভাবেই কাজের ক্লান্তিকে আপনার ওপর চেপে বসতে দেবেন না। এ জন্য মাঝেমধ্যেই অবসাদ দূর করতে আপনার পছন্দকে গুরুত্ব দিন। সুইজারল্যান্ডের এক গবেষণা জানিয়েছে, অবসাদ দূর করার তৎপরতা হৃদযন্ত্রের সংকট কাটায় ৫৭ শতাংশের কাছাকাছি।

১১. বিদায় জানান ফ্লু-কে: জার্নাল হার্টের প্রতিবেদন জানিয়েছে, যেসব ওষুধ ফ্লু জাতীয় ভাইরাস দূর করতে ব্যবহার করা হয় তা হার্টের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সারাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। উদাহরণ হিসেবে তারা ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকার কথা বলেছেন। এই টিকা একই সঙ্গে ধমনির প্রদাহ দূর করতেও শক্তিশালী ভূমিকা রাখে।

১২. বালিশে মাথা রাখুন সময়মতো: যাদের অনিদ্রা নামক রাজরোগ আছে, তারা অন্যদের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি হার্ট এটাকের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের জন্য প্রতিদিন বেশি বেশি শারীরিক পরিশ্রম করার আহ্বান জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

১৩. নাস্তি অধিক ঘুমেও: এমনকি যারা বেশি বেশি ঘুমকাতুরে তাদেরও সাবধান করে দিয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, দিনে ১০ ঘণ্টা কিংবা তার বেশি সময় যাদের ঘুমে কাটে তাদের স্থূলতার পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকে, কমতে থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। সুতরাং অধিক ঘুমে নাস্তি।

১৪. খাদ্য তালিকায় কমাতে থাকুন চর্বির পরিমাণ: খাবারে থাকা চর্বি হৃৎপিণ্ডকে অকার্যকর করে তুলতে ভূমিকা রাখে। সুতরাং খাদ্য তালিকা থেকে নিয়মিতভাবে চর্বির পরিমাণ কমাতে থাকুন, তবে অবশ্যই পুষ্টি তালিকার নিুক্রম ছাড়িয়ে যাবেন না।

১৫. যোগ করুন পটাশিয়ামযুক্ত খাদ্য: প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় ক্রমাগতভাবে যুক্ত করতে থাকুন পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ। এ ক্ষেত্রে কলা এবং মিষ্টি আলুকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

১৬. ত্বকে দিন সূর্যের আলো: প্রতিদিন ২০ মিনিট করে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ে, যা রক্তচাপকে কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

১৭. নীরবতাকে প্রাধান্য দিন: হার্টের সমস্যার সঙ্গে উচ্চ ডেসিবেলের শব্দেরও বেশ যোগ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে দূরে প্রতি ১০ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার হার্ট এটাকের পরিমাণও বাড়তে থাকে ১২ শতাংশ হারে।

১৮. সময় দিন গৃহপালিত প্রাণীদের: নিজেকে নীরোগ রাখতে বাড়ির গৃহপালিত কুকুর-বিড়াল বা পাখিদের প্রতিও মনোযোগী হোন। অন্য প্রাণীদের প্রতি উদারতা আপনার হার্টের সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।

১৯. সবার সঙ্গে অংশ নিন সকালের নাশতায়: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা সকালের পারিবারিক নাশতার টেবিল মিস করে তাদের হৃদযন্ত্রকালীন সংকটের পরিমাণ অন্যদের থেকে ২৭ শতাংশ বেশি থাকে।

২০. ছুড়ে ফেলুন এনার্জি ড্রিংকস: শক্তিবর্ধক এসব পানীয়কে ‘শত্রু’ হিসেবে গণ্য করুন। কেননা এসব পানীয় কোনোভাবেই আপনার কোনো ধরনের উপকারে আসবে না, উল্টো রক্তচাপ বাড়িয়ে মুহূর্তেই আপনাকে ধসিয়ে দেবে।

২১. পান করুন গরুর দুধ: গরুর দুধে থাকা লো ফ্যাট হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবিরোধী কম ঘনত্বসম্পন্ন লিপ্রোপ্রোটিনের হার কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দুধে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরে জমে থাকা পুরু চর্বির স্তর কাটতে ভূমিকা রাখে।

২২. ব্যায়ামে কমান উপুড় হওয়ার প্রবণতা: সাধারণত উবু হওয়া ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের পেশিগুলো আরো কার্যকর হয়ে ওঠে। কিন্তু এই ধরনের ব্যায়াম একই সঙ্গে হৃৎপিণ্ডকে নিঃশেষ করতেও ভূমিকা রাখে। তাই উপুড় ব্যায়াম সংকোচন শুরু করুন।

২৩. গান গান ইচ্ছামতো: হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে গলা ছেড়ে গান গাইতেও উৎসাহিত করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, দলবদ্ধ সংগীত কিংবা কারাওকে হাসিখুশি রাখে হৃদযন্ত্রকেও।

২৪. মসলা হলে দারুচিনি: খাদ্য তালিকায় মসলা ব্যবহারে আপত্তি থাকলেও দারুচিনির ব্যবহার হৃৎপিণ্ডকে সতেজ করে তুলতে অনন্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেলা খাবারে দুই চা চামচ দারুচিনি রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আনে, এমনকি মাংস খাবার পরের মুহূর্তেও।

২৫. বাড়ান সামাজিক যোগাযোগ: একা বাস করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় বেশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকে। তাই অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন, হাত মেলান, জড়িয়ে ধরুন এবং আরো বেশি সামাজিক হতে চেষ্টা করুন; নিজের স্বার্থেই।

২৬. সালাদকে ভোলার কারণ নেই: খাবারে যদি সবুজ সালাদ থাকে তাহলে আপনার রসনা তৃপ্তির পাশাপাশি হার্টও খুশি থাকবে। তাই বেশি বেশি যুক্ত থাকুন ভিনেগার, জলপাইয়ের তেল কিংবা লেবুর শরবতের সঙ্গে।

২৭. হয়ে উঠুন শাকাহারী: বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন অন্তত দু-একটি শাকপাতা থাকে, তাদের হৃৎপিণ্ড অন্যদের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি সবল থাকে। তাই শাকাহারী হয়ে উঠতে উৎসাহ জুগিয়েছেন গবেষকরা।

২৮. থাকুন হাসিখুশি: হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত মুখাবয়ব শুধু স্টাইল বা ফ্যাশন আইকনই আপনাকে করে তুলবে না, বাড়িয়ে দেবে আপনার নীরোগ থাকার প্রবণতাও। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাণবন্ত উপস্থিতি আপনার অবসাদ ও অভ্যন্তরীণ প্রদাহকে ছুটি দিয়ে দেবে এবং অলিন্দ ও নিলয়ের প্রকোষ্ঠকে সুঠাম রাখবে।

২৯. সবজি খান রঙ দেখে: রঙিন সবজি বা তরিতরকারির প্রতি আগ্রহ বাড়ান। কেননা কমলা বা সবুজ রঙের প্রতিটি সবজি আপনার রক্তচাপকে অনিয়মিত প্রবাহের হাত থেকে সুরক্ষা দেবে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার জন্যও বেশ উপকারী।

৩০. আরোহণ করুন সাইকেলে: ঘরে কিংবা বাইরে সাইকেলে আরোহণ চর্চা বাড়িয়ে দিন। প্রতিদিনের বাহন হিসেবে সাইকেলকে যদি গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তো কথাই নেই, কিন্তু যদি তা না হয় তাহলে ঘরের ব্যায়ামে প্রাধান্য দিন সাইক্লিংকে। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সাইক্লিং হৃদযন্ত্রের প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখবে।

সূত্র: ওয়েবসাইট




নাম

অর্থ ও বাণিজ্য,237,আন্তর্জাতিক,732,কাপাসিয়া,343,কালিয়াকৈর,418,কালীগঞ্জ,253,খেলা,644,গাজীপুর,3943,চাকরির খবর,34,জয়দেবপুর,1581,জাতীয়,2968,টঙ্গী,912,তথ্যপ্রযুক্তি,512,ধর্ম,196,পরিবেশ,137,প্রতিবেদন,310,বিজ্ঞান,55,বিনোদন,698,ভিডিও,58,ভিন্ন খবর,142,ভ্রমন,115,মুক্তমত,27,রাজধানী,829,রাজনীতি,1057,লাইফস্টাইল,283,শিক্ষাঙ্গন,398,শীর্ষ খবর,10777,শ্রীপুর,481,সাক্ষাৎকার,12,সারাদেশ,649,স্বাস্থ্য,212,
ltr
item
GazipurOnline.com: হার্ট সুস্থ রাখতে জেনে নিন ৩০ কৌশল
হার্ট সুস্থ রাখতে জেনে নিন ৩০ কৌশল
http://2.bp.blogspot.com/-W-Cz8tvrvYg/U-AAeyymDkI/AAAAAAAAJeM/ifni2qsJsAs/s1600/heart.jpg
http://2.bp.blogspot.com/-W-Cz8tvrvYg/U-AAeyymDkI/AAAAAAAAJeM/ifni2qsJsAs/s72-c/heart.jpg
GazipurOnline.com
https://www.gazipuronline.com/2014/08/heart.html
https://www.gazipuronline.com/
https://www.gazipuronline.com/
https://www.gazipuronline.com/2014/08/heart.html
true
13958681640745950
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Read More Reply Cancel reply Delete By প্রচ্ছদ PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share. STEP 2: Click the link you shared to unlock Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy