গাজীপুর অনলাইনঃ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা ঢাকাসহ আট জেলার কৃষি খাস জমি ফের বন্দোবস্ত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমির শ্রেণীবিন্যাস করে কৃষি ও অকৃষি ভূমি চিহ্নিত করতে বিলম্ব করায় খোদ ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে বন্দোবস্ত প্রদানে যে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। যেসব জেলা-উপজেলার জমি শ্রেণীবিন্যাস করা হয়নি, তা এক মাসের মধ্যে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
১৯৯৮ সালে জাতীয় কৃষি ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে আট জেলার ১৯টি উপজেলার কৃষিজমি বন্দোবস্ত দেয়া স্থগিত করে সরকার। কৃষি ব্যস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যে জমিতে দু-তিনটি ফসল আবাদ করা হয়, তা কোনো অবস্থাতেই হারিয়ে যেতে দেয়া হবে না। একাধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব, এমন জমি সংরক্ষণ করতে হবে। পক্ষান্তরে যেসব জমিতে চাষাবাদ হয় না, ওই জমি চিহ্নিত করে তা শিল্প প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দের নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৯৯৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে আট জেলার অর্থাৎ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রাজশাহী জেলার মোট ১৯টি উপজেলার কৃষিজমি বন্দোবস্ত না দেয়ার জন্য পরিপত্র জারি করা হয়।
একই সঙ্গে এসব জেলার জমির শ্রেণীবিন্যাসের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের প্রধান করে কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির কাজ ছিল কোনটা কৃষি ও কোনটা অকৃষি জমি, তা নির্ধারণ করা। নরসিংদী সদর, গাজীপুর সদর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, রাজশাহীর পবা ও বোয়ালিয়া ছাড়া অন্য সব জেলা-উপজেলার জমির শ্রেণীবিন্যাস করা হয় ১৪ বছর আগেই। অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ২০০০ সালের মধ্যে বেশিরভাগ জেলা ও উপজেলার কোন জমি কৃষি, আর কোন জমি অকৃষি, তা নির্ধারণ করেছিল। সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, জমির শ্রেণীবিন্যাস না থাকায় কৃষিজমি অকৃষি আর অকৃষি কৃষি হিসেবে দেখিয়ে বেচাকেনার সময় লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে বিশেষ বৈঠক করে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানান, সাভার, ধামরাই ও কেরানীগঞ্জের জমি অকৃষি ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব স্থানে কোনো কৃষিজমি নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন জানায়, জেলা সদর, সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ উপজেলার জমি অকৃষি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। অন্যান্য উপজেলার ভূমি কৃষিজমি। গাজীপুর জেলা প্রশাসন জানায়, সিটি করপোরেশন হওয়ায় জেলা সদরে কৃষিজমি নেই বললেই চলে। শুধু কাপাসিয়ায় কিছু কৃষিজমি রয়েছে। তবে যেসব জেলা-উপজেলার ভূমির শ্রেণীবিন্যাস দীর্ঘ ১৬ বছরেও সম্পন্ন হয়নি, ওই সব জেলা ও উপজেলার ভূমি শ্রেণীবিন্যাসের জন্য এক মাস সময় বেঁধে দেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। ভূমির শ্রেণীবিন্যাসের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না করায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।