![]() |
ছবিঃ আবু সুফিয়ান নিলাভ |
গাজীপুর অনলাইনঃ চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে... কবির এই কথাই যেন আজ রাতে ধরা দিচ্ছে সারাদেশে। এ অন্য কিছু নয়। কাঙ্খিত আগস্ট সুপারমুন নাইট দেখতে পাচ্ছে আজ সারা দেশবাসী।
রবিবার রাতের আকাশে যে চাঁদ হাসছে তার আকার স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুন বড়। আর নেমে এসেছে পৃথিবীর অনেকটা কাছে।
সুপারমুন হচ্ছে কক্ষপথে পৃথিবী ও চাঁদের নিকট অবস্থানে সংঘটিত পূর্ণিমা। পৃথিবীর অবস্থান নিকটতম হওয়ায় চাঁদকে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল দেখতে পাওয়া যায়। আর সেই সুপারমুন নাইট-ই উপভোগ করছে আজ দেশবাসী।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় চাঁদের এই নিকটতম অবস্থানকে বলা হয় পেরিজি এবং দূরতম অবস্থানকে বলা হয় অ্যাপজী। জ্যোতিষী রিচার্ড নোলে সর্বপ্রথম ১৯৭৯ সালে ‘সুপারমুন’ শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে জ্যোতির্বিজ্ঞানেও নামটি সমাদৃত হয়। মূলত দৃশ্যমান বৃহদাকৃতি চাঁদের কারণেই সুপারমুন নামটি গ্রহণযোগ্য।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায়, প্রতি ১৪টি চান্দ্র মাস সম্পন্ন হওয়ার পর একটি সুপারমুন ঘটে। একটি সুপারমুন সংঘটিত হওয়ার পর ১৫তম পূর্ণিমাটি হচ্ছে সুপারমুন। আর এটি খালি চোখেই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে তিনবার এ সুপারমুন দেখা মিলবে। একটি তারিখ ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে। গত ১২ জুলাই ছিল বছরের প্রথম সুপারমুন। আর আজ ১০ আগস্ট দেখা যাচ্ছে বছরের দ্বিতীয় সুপারমুন। সবশেষ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সুপারমুন দেখা যাবে। তবে আজকের সুপারমুনেই চাঁদ পৃথিবীর বেশি কাছে আসবে।
আজকের চাঁদ পৃথিবী থেকে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করবে। এর আগে ২০১৩ সালের ২৩ জুন পৃথিবী থেকে ৩,৫৬,৯৯১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করে চাঁদ।
এরপর সুপারমুন দেখতে বিশ্ববাসীকে আরও একবছর অপেক্ষা করতে হবে। আবার সুপারমুন দেখা যাবে ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। তখন পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব হবে তিন লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বরের সুপারমুনে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব হবে তিন লাখ ৫৬ হাজার ৫০৯ কিলোমিটার।
প্রকৃতিতে সুপারমুনের তেমন কোন প্রভাব নেই। পূর্ণিমা জোয়ারের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে থাকে, বিশেষ করে পৃথিবী, সূর্য ও চাঁদ একই সরলরেখায় থাকলে। তবে এমন কথা ছড়িয়ে আছে, চাঁদ পৃথিবীর কাছে আসলে প্রতিবারই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। ২০১১ সালের ১৯ মার্চ সুপারমুন রাতে ইংল্যান্ডের সোলেন্ট সাগরে ভাসমান ৫টি বড় জাহাজ সাগরের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়।
তবে ভূ-পৃষ্ঠে সুপারমুনের প্রভাব খুবই সামান্য বলে জানিয়েছেন নাসা’র বিজ্ঞানী জেমস গারভিন।