জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু জেল দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে-বাইরে স্বস্তিতে থাকবে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী আনন্দ বাজার পত্রিকা।
পত্রিকাটি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করেছে। রায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিচারবিভাগকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন বলেও মন্তব্য করে পত্রিকাটি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার এই রায়ে ঘরে-বাইরে বেশ খানিকটা স্বস্তিতেই থাকবে। ধর্মীয় নেতা হিসেবে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সমর্থন জামায়াতে ইসলামির চৌহদ্দি ছাড়িয়ে অন্য দলের মানুষের মধ্যেও কম নেই। তার ফাঁসি অনেকেই হয়তো মেনে নিতে পারতেন না। তা ছাড়া, যৌথ বাহিনীর একের পর এক অভিযানে জামায়াতের সংগঠন এখন অনেকটাই কোণঠাঁসা।
সুপ্রিম কোর্ট সাঈদীর ফাঁসির রায় বহাল রাখলে নাশকতার মাধ্যমে তারা ফের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পেত। আন্তর্জাতিক মহলেও জামায়াত নেতাদের ফাঁসির বিরুদ্ধে একটা জনমত গড়ে উঠেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ ধর্মীয় নেতাদের ফাঁসির বিরোধিতা করেছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ইইউ।
সরকারের এক কর্তার কথায় এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট যে সরকারকে অস্বস্তি থেকে বাঁচাল, শেখ হাসিনা তার জন্য বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন।
এই রায় উপলক্ষে কাল বিকাল থেকেই গোটা বাংলাদেশের নিরাপত্তা কঠোর করা হয়েছিল। ঢাকায় পুলিশের বিশেষ পাহারা ও টহলদারি চোখে পড়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীও। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি মহম্মদ মোজাম্মেল ও অন্য চার বিচারপতি আদালত কক্ষে আসেন। মাত্র তিন মিনিটে তারা রায়ের সারাংশ পাঠ করে আদালত মুলতবি করে দেন।
আব্দুল কাদের মোল্লার মামলার পরে এই নিয়ে দ্বিতীয় যুদ্ধাপরাধের মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হল। রায় ঘোষণার পরে দুপুরেই সরকারি জোটের ১৪ দল বৈঠকে বসে। পরিস্থিতি পর্য়ালোচনার পরে রায়কে স্বাগত জানায় তারা।
তবে জামায়াত রায়কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করে কাল ও রবিবার দু’দফায় ৪৮ ঘণ্টা করে হরতালের ডাক দিয়েছে। সরকার তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, হরতালে নাশকতা ও সন্ত্রাসের চেষ্টা হলে কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে।