পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামির বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় দুদক তাদের দায়মুক্তি দিয়েছে। বুধবার দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে আমরা কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাইনি। যে অভিযোগে মামলা করেছিলাম দীর্ঘ তদন্তে সেই অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশ্বব্যাংক ওই সময় যে প্রতিবেদন দিয়েছিল সেটার ওপর ভিত্তি করে আমরা মামলাটি করেছিলাম। মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কাগজপত্র কানাডার আদালতেও পাওয়া যায়নি। এই মামলার মধ্যে কিছুই নেই। কিছু থাকলে মামলাটিকে এগিয়ে নেওয়া যেত। ফলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দেড় বছরের বেশি সময়ের তদন্তে মামলাটিকে এগিয়ে নেওয়ার মতো তথ্য পাওয়া যায়নি মর্মে আদালতে চার্জশিট পেশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কানাডার প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতুর পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে 'ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের' অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থানায় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওএসডি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
দুদকের মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রাখা হয় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে।
মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে আসামি না করায় তখন অর্থায়ন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় বিশ্বব্যাংক। বিষয়টি তখন সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতে ফেলে। অভিযোগ মাথায় পদত্যাগ করেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন।
বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্বে ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০,৫০৭ কোটি টাকা) ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা অনুমোদন করে।
কিন্তু পরে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর সরকার বিশ্বব্যাংকের অর্থে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায়। সরকার এখন নিজস্ব তহবিলে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।