দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন থ্রিজি সেবায় গতির দৌড়ে রয়েছে সবার পেছনে। আর সবার আগে রয়েছে বাংলালিংক। ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির কাছে যোগাযোগ করা হলে সিটিও ফোরামের আয়োজনের ব্যস্ততা দেখিয়ে কেউই আনুষ্ঠানিক কিছু জানাতে রাজি হননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুলাই থেকে বিভাগীয় সদর অন্যান্য জেলায় সরেজমিন থ্রিজি সেবা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে একটি সমীক্ষা চালায় বিটিআরসির প্রতিনিধি দল। পরে ৪টি বেসরকারি অপারেটরের অফিসে গিয়েও নেটওয়ার্ক থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিটিআরসির তথ্য মতে, বাংলালিংকের থ্রিজি ইন্টারনেটের গতি গড়ে ২ এমবিপিএস পর্যন্ত। চার অপারেটরের মধ্যে গ্রামীণফোনের গতি সবচেয়ে কম। বিভিন্ন প্যাকেজে শীর্ষ এ অপারেটরটি ৫১২ কেবিপিএস এবং ১ এমবিপিএস গতি দিচ্ছে। অন্যদিকে রবির গতি ১ দশমিক ৯ এমবিপিএস এবং এয়ারটেলের থ্রিজি ডেটার গতি ১ দশমিক ২ এমবিপিএস।
মূলত বেসরকারি অপারেটরগুলোর থ্রিজির বিস্তার (রোলআউট) সম্পর্কিত বাধ্যবাধ্যকতা কতোটা পূরণ হয়েছে তা দেখার জন্য কাজ করে প্রতিনিধি দলগুলো। সে কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটককে এ পর্যবেক্ষণের বাইরে রাখা হয়।
দেশজুড়ে ঘুরে পর্যবেক্ষণ শেষে থ্রিজি সেবাদানকারী অপারেটর চারটির এ বিষয়ক অগ্রগতির একটি চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রতিনিধি দলগুলো। পরে তা বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
থ্রিজির লাইসেন্সের নীতিমালা অনুসারে নয় মাসের মধ্যে সবগুলো বিভাগীয় শহরে উচ্চগতির এ মোবাইল ইন্টারনেট সেবা নিয়ে যাওয়ার কথা। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে চার অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল এবং বাংলালিংকের থ্রিজি লাইসেন্স নেওয়ার নয় মাস পূর্ণ হয়।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ৬৪ জেলায় থ্রিজির বিস্তার ঘটানো গ্রামীণফোনের থ্রিজি গ্রাহক ১৯ লাখ। বাংলালিংক ২৩ জেলায় থ্রিজি নিয়ে গেছে। তাদের গ্রাহক পৌঁনে ৫ লাখ।
এদিকে সম্প্রতি বিটিআরসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে থ্রিজি গ্রাহক সংখ্যায় দেশে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে রবি এবং সবার পেছনে রয়েছে এয়ারটেল। এছাড়া থ্রিজি গ্রাহক সংখ্যায় সবার আগে দেশের ৬৪ জেলায় থ্রিজির নেটওয়ার্ক তৈরি করা গ্রামীণফোনের অবস্থান দ্বিতীয়। বিশেষ সুবিধায় সবার আগে থ্রিজি সেবা চালু করা রাষ্ট্রীয় টেলিফোন অপারেটর টেলিটক তৃতীয় এবং এর পরের অবস্থানে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিফোন অপারেটর বাংলালিংক।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই মাসের শেষে দেশে মোট থ্রিজি ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৭ জন। এর মধ্যে রবি আজিয়েটার গ্রাহক সংখ্যা ১৩ লাখ পাঁচ হাজার। গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে থ্রি জির গ্রাহক রয়েছে ১২ লাখ ৮৭ হাজার।
একই সময়ে টেলিটক এর থ্রিজি গ্রাহক ছিল ১০ লাখ ৪৪ হাজার। বাংলালিংক এর থ্রিজি গ্রাহক ৬ লাখ ৬৯ হাজার এবং এয়ারটেলের রয়েছে ৫ লাখ ৩৯ হাজার থ্রিজি গ্রাহক। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে থ্রিজি স্পেকট্রামের নিলাম মাধ্যমে লাইসেন্স পেয়ে অক্টোবর মাস থেকেই বেসরকারি টেলিকম অপারেটররা রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে থ্রিজি সেবা দিতে শুরু করে।