বিনোদন ডেস্কঃ ভারতীয় সিরিয়াল দেখতে না পেরে অথবা ভারতীয় সিরিয়ালের কোন এক অভিনেত্রীর অনুরূপ পোশাক কিনতে না পেরে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছে আমাদের দেশের তরুণীরা। সন্ধ্যে হলেই যেন টেলিভিশনের রিমোট চলে যায় আমাদের দেশের নারীদের হাতে। এর পরেই চলতে থাকে একের পর এক সিরিয়াল। সকল কাজকর্ম সবকিছু তখন ফেলে রেখে আমাদের দেশের নারিরা তখন এক ধ্যানে টিভির সামনে বসে অপলক দৃষ্টিতে গিলে যাচ্ছে সিরিয়ালের সকল কাহিনী। সিরিয়ালের গতানুগতিক এবং আজগুবি কাহিনীগুলো বছরের পর বছর মুগ্ধ হয়ে দেখছেন অধিকাংশ নারী।
বাস্তব জীবনে কখনই হওয়া সম্ভব না এমন ঘটনাগুলোই নিয়মিত দেখতে দেখতে একটা পর্যায়ে মগজ ধোলাই হয়ে যেতে থাকে তাদের। ফলে কোনটা বাস্তব আর কোনটা গাঁজাখুরি সেই পার্থক্য করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন ভারতীয় সিরিয়ালের নিয়মিত দর্শকরা। কিন্তু কি এমন আছে যে সিরিয়ালের প্রতি তাদের এত আসক্তি? তবে সেই কারন গুলো জানা গেলেও আসুন জেনে নেই সিরিয়ালের যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি বদ হজম হয় আমাদের দেশের নারীদের মধ্যে।
দেখার নেশায়। ভারতীয় জেনে নেয়া যাক কিছু আজগুবি এবং অসম্ভব ঘটনা সম্পর্কে যেগুলো অহরহই দেখানো হচ্ছে ভারতীয় সিরিয়ালে।
১) নায়ক নায়িকা প্রেম করে বিয়ে করে। কিছুদিনের মাঝেই শুরু হয় সন্দেহ এবং অশান্তি, পরিণতি হয় ডিভোর্স। এরপর নায়ক বিয়ে করে নায়িকার বোনকে। এরপর নায়ক তার ভুল বুঝতে পারে এবং অনেক জটিলতার অবসান ঘটিয়ে হয় দুই বৌকেই রাখে, না হয় নায়িকার বোনকে আবারও ডিভোর্স দিয়ে পুনরায় বিয়ে করে নায়িকাকে।
২) অনেক বড়লোক ব্যক্তি হঠাৎ করেই গরিব হয়ে যায় কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রে। ফলে ঘরবাড়ি সব বিক্রি করে দেয় সেই খারাপ লোকের কাছে। অতঃপর থাকার কোনো যায়গা না পেয়ে চাকর হিসেবে থাকে সেই ব্যক্তির ঘরে!
৩) নারীরা ঘুমায়, গোসল করে এবং খায় ভারী গহনা আর জমকালো পোশাকে। কখনই মেকআপ ফ্যাকাসে হতে দেখা যায়না তাদের।
৪) একজন পুরুষের জন্য ৫/৬জন নারীর আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। এই একজন পুরুষকে ঘিরেই চলতে থাকে নারীদের কুটনামি।
৫) সন্তান হওয়া মানেই বিশাল বিপদ। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য যেসব বিপদ হতে পারে সেগুলো হলো – বাচ্চার বাবা স্বীকার করবে না এটা তার সন্তান, গর্ভাবস্থায় সিড়ি থেকে পড়ে যাওয়া, জন্ম দিয়ে গিয়ে মায়ের মৃত্যু, হাসপাতালেই বাচ্চা হারিয়ে যাওয়া।
৬) নাটকের সংলাপের চাইতে ব্যাকগ্রাউন্ডের মিউজিক অনেক বেশি।
৭) নাটকের মূল নায়িকার জীবনটা কখনই সুখের হয়না। তার জীবনে ‘সুখ’ শব্দটার উপস্থিতি কখনই রাখা হয়না ভারতীয় সিরিয়ালে।
৮) নানি-দাদিরা নাতি-পুতি এবং এর পরের বংশধরদেরকেও দেখে যেতে পারেন বেশ সুস্থ সবল ভাবেই।
৯) সব নাটকের একটিই মন্দির থাকে। এবং কাউকে খুঁজতে হলে এই মন্দিরে গেলেই খুঁজে পাওয়া যায়।
১০) সিরিয়ালের নায়ক/নায়িকা মারা গেলে পরিবারে নেমে আসে দুঃখ। কিন্তু কিছুদিন পরেই জানা যায় যে সে আসলে মারা যায়নি। নায়ক/নায়িকা প্লাস্টিক সার্জারি করে বদলে ফেলানো চেহারা অথবা আগের চেহারা নিয়েই ফিরে আসে পরিবারের কাছে।
১১) প্রতিটি সিরিয়ালেই হয় ঘরের বৌ খারাপ হয় না হয় শাশুড়ি। একসঙ্গে বৌ-শাশুড়ি দুজনই ভালো, এই দৃশ্য দেখা যায় না ভারতীয় সিরিয়াল গুলোতে।
১২) ছেলে বৌ, শাশুড়ি এবং দাদী শাশুড়ির বয়সে তেমন কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না।