স্টাফ রিপোর্টারঃ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের যোগসাজসে চুরি হয়ে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ অ্যালুমোনিয়ামের তার। চোর চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে তার চুরি করে তা গলিয়ে বাজারে চড়াদামে বিক্রি করছে।
মঙ্গলবার ভোরে র্যাব-১ অভিযান চালিয়ে আটক করেছে এ চক্রের ১৩ সদস্যকে। জব্দ করা হয়েছে ২৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের বিপুল পরিমাণ তার।
র্যাব জানায়, গাজীপুরের কোনাবাড়ি বাইমাইল এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে সীমানা প্রাচীর বেষ্টনীর ভেতরে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) নামে কোরিয়া থেকে আমদানি করা তারের ড্রাম থেকে তার চুরি করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ তার, তার বহনকারী তিনটি ট্রাক ও একটি ক্রেন জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে আটক করা হয় ১৩ জনকে।
আটকরা হলেন- হাবিবুল্লাহ, নূরুল ইসলাম, আয়ুব আলী, মোবারক, মাইনুদ্দিন, আয়েদউল্লাহ, হোসেন, আলী হোসেন, সুমন, দিদার, কাউছার, জাহাঙ্গীর, লিটন। এসময় কারখানার ম্যানেজারসহ পালিয়ে যান বেশ কয়েকজন। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন র্যাবের সিইও লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান গাজীপুর অনলাইনকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানির পর ওই তারগুলো ট্রাকযোগে কোনাবাড়িতে আনা হতো। পরে তারের বড় ড্রামগুলো নামিয়ে চুরি করা হতো এসব তার। চক্রটির হোতা ঢাকার গোলাম মাওলা কায়েস ও তার সহযোগীরা ৬ বছর ধরে আমদানি করা এসব তারের ড্রাম খুলে প্রতি ড্রাম থেকে ১৮শ’ কেজি তার কেটে রেখে দিতো। পরে ওই তারের ড্রামটি আবার সিলগালা করে তার ভর্তি ড্রামগুলো পিজিসিবি অফিসে পাঠানো হতো। পরে চোরাই তার গ্যাসের চুল্লিতে গলিয়ে অ্যালুমোনিয়ামের বার তৈরি করে বিভিন্ন কারখানায় বিক্রি করে আসছিল চক্রটি। র্যাব অভিযান চালিয়ে এসব চোরাই তারের কয়েকটি ড্রাম জব্দ করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ১৩ জনকে আটক করা হয়।
চোরাই এসব তার যে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের তা নিশ্চিত করেছেন পাওয়ার গ্রিডের এক কর্মকর্তা।
কবিরপুর ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন জানান, বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর সঞ্চালন লাইনের জন্য কোরিয়া থেকে এসব তার আমদানি করা হয়। চোরাই এসব তারের মূল্য ২৫ কোটি টাকারও বেশি বলে জানান তিনি।
তবে কালিয়াকৈর গ্রিডের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম জানান, বিবিয়ানা কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের ১৬৮ কিলোমিটারের জন্য তার আমদানি করা হয়। এ প্রকল্পের জন্য জিএস কোরিয়া নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সঞ্চালন লাইনের জন্য তার কম পড়লে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সেটি দেখভাল করবে। আমাদের করণীয় কিছু নেই।