গাজীপুরের সাত শতাধিক পোশাক কারখানায় রফতানি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়নে অস্বাভাবিক হারে ফি দাবি করছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) কর্তৃপক্ষ। কারখানার আকারভেদে ১০ হাজার টাকার ফি এখন দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে জিসিসি। বাড়তি ফি দিতে রাজি না হওয়ায় ছোট-মাঝারি অন্তত ৭০০ কারখানার লাইসেন্স আটকে আছে। আবার ট্রেড লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজ হালনাগাদ না থাকলে রফতানি আদেশ দেন না ক্রেতারা। এ কারণে রফতানি বিঘ্নিত হচ্ছে এসব কারখানার।
উদ্যোক্তাদের এ দাবি অস্বীকার করেছেন জিসিসি মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্য সিটি করপোরেশন যা আদায় করছে, তারাও সে নিয়ম মেনেই আদায় করছেন। বরং উদ্যোক্তাদের সমস্যা বিবেচনায় মোট ফির এক-তৃতীয়াংশ নিয়েও লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, জিসিসি এলাকায় এক হাজার ১০০ পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে আশুলিয়া, টঙ্গী, বাইপাইলের মতো পোশাক কারখানা অধ্যুষিত এলাকা রয়েছে। পোশাক রফতানি থেকে আসা মোট আয়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জোগান দেয় এসব কারখানা।
বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন হওয়ার পর কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই ট্রেড লাইসেন্স ফি সাত থেকে আট গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ গ্যাস-বিদ্যুৎসহ রাস্তাঘাট, কোনো অবকাঠামো থেকেই প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়ন জটিলতায় জিসিসি এলাকার কারখানাগুলোতে রফতানি আদেশ নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। ক্রেতা প্রতিনিধিরা রফতানি আদেশ দেওয়ার সময় কারখানার আইনগত মর্যাদা-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সব কাগজ দেখে নেন। এ ক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা থাকলে শেষ পর্যন্ত আর রফতানির আদেশ আর দেন না ক্রেতারা। বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, একের পর এক নতুন নতুন খাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়তে থাকলে রফতানি বাজারে প্রতিযোগিতায় মার খাবে বাংলাদেশের পোশাক।
গাজীপুরে অবস্থিত ফারসি ডাইংয়ের এমডি ফয়জুন নবী চৌধুরী বলেন, নতুন অর্থবছরের গত দুই মাস অতিরিক্ত লাইসেন্স ফি দাবি করায় অনেক উদ্যোক্তা লাইসেন্স নিতে পারছেন না। তার অভিযোগ, এত বছর কারখানা ভবনের ভাড়া মূল্যের ওপর একটা ফি নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু এ বছর ভবনের নির্মাণ ব্যয়ের ওপর স্কয়ার ফুট অনুযায়ী ফি দাবি করছে জিসিসি। এর ফলে কারখানার আকারভেদে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার লাইসেন্স ফি দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। লাইসেন্স নিয়ে এ জটিলতায় তার নিজের কারখানাসহ গাজীপুরের প্রায় সব কারখানায় রফতানি কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
এবি মার্ট ফ্যাশনওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদরুল আলম বলেন, দুই মাস ধরে লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে না বলে নতুন রফতানি আদেশ দিচ্ছেন না ক্রেতারা। অবশ্য ক্রেতার নাম জানাতে রাজি হননি তিনি। তার অভিযোগ, গত বছরও লাইসেন্স নবায়ন ফি ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর হঠাৎ এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। অতিরিক্ত ফি দেওয়া হয়নি বলে এখনও লাইসেন্স পাননি তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিসিসি মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, সরকারের নির্ধারিত হারের বাইরে এক পয়সাও অতিরিক্ত আদায় করছেন না তারা। স্কয়ার ফুট প্রতি এক হাজার ১৯২ টাকা হারে সব সিটি করপোরেশনের জন্যই সরকার নির্ধারিত করে দিয়েছে; বরং উদ্যোক্তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে মোট ফির আপাতত ৩০ শতাংশ জমা নিতে সম্মত হয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। বাকিটা পরে দিলেই হবে।
তিনি বলেন, গত বছর পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স ফি বেড়েছে। গত অর্থবছর পর্যন্ত পৌরসভার হার অনুযায়ী সব ধরনের কর আদায় করা হতো। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সিটি করপোরেশনের হার অনুযায়ী ফি আদায় করা হচ্ছে। এ কারণে উদ্যোক্তাদের কাছে হঠাৎ করে ফির পরিমাণ বেশি মনে হতে পারে। বাড়তি ফির জন্য নবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।
প্রতিবেদকঃ আবু হেনা মুহিব
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিসিসি মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, সরকারের নির্ধারিত হারের বাইরে এক পয়সাও অতিরিক্ত আদায় করছেন না তারা। স্কয়ার ফুট প্রতি এক হাজার ১৯২ টাকা হারে সব সিটি করপোরেশনের জন্যই সরকার নির্ধারিত করে দিয়েছে; বরং উদ্যোক্তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে মোট ফির আপাতত ৩০ শতাংশ জমা নিতে সম্মত হয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। বাকিটা পরে দিলেই হবে।
তিনি বলেন, গত বছর পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স ফি বেড়েছে। গত অর্থবছর পর্যন্ত পৌরসভার হার অনুযায়ী সব ধরনের কর আদায় করা হতো। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সিটি করপোরেশনের হার অনুযায়ী ফি আদায় করা হচ্ছে। এ কারণে উদ্যোক্তাদের কাছে হঠাৎ করে ফির পরিমাণ বেশি মনে হতে পারে। বাড়তি ফির জন্য নবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।
প্রতিবেদকঃ আবু হেনা মুহিব