গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ঈদের পরদিন দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। কোর সাফারি পার্কের অংশে সবচে ভিড় ছিল। দর্শনার্থীরা সেখান থেকে ৫টি গাড়িতে চড়ে নির্ধারিত মাঠে থাকা উন্মুক্ত বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, জেব্রা ও জিরাফসহ বিভিন্ন বিদেশি জন্তু দেখছেন।
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, ঢাকা চিড়িয়াখানায় অল্প জায়গায় বন্দি জীব-জন্তুর চেয়ে এখানে বিশাল মাঠে বাঘ, সিংহ, হরিণ ও জিরাফ দেখার মজাই আলাদা। গাড়িতে চড়ে পার্কের ভেতর যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এবং শুয়ে থাকা বাঘ-সিংহগুলো গাড়ির শব্দ শুনে দৌড়ে সরে যায়। ময়মনসিংহের ভালুকার আবদুল মতিন দুলাল জানান, তিনি খোলা মাঠে বাঘ, সিংহ, জিরাফ দেখার জন্য গাজীপুরের সাফারি পার্কে এসেছেন। এখানে ভালুক, ম্যাকাউ পাখি, ক্রাউন্ট ফিজেন্ট, ধনেশ পাখি, উট পাখি, ইমু, ক্রাউন ক্রেন, ওরিক্স, ওয়াইল্ড বিস্ট, টিয়া, কুমির, বিস্নচ বক ও ক্যাঙ্গারুসহ বিভিন্ন জীবজন্তু দেখে খুবই আনন্দ পেয়েছেন।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, ঈদের দিন প্রায় ৩ হাজার দর্শনার্থী থাকলেও দ্বিতীয় দিন পার্কে ১৫-১৬ হাজার দর্শনার্থী ছিল। পার্কে ১১টি বাঘ, ৯টি সিংহ, ৪টি জিরাফ, ৪টি হাতি, ২৮টি কুমির, ২০টি ম্যাকাউ, ৩ শতাধিক টিয়া পাখি, ৯টি ভালুক, ২৩টি হরিণ, ৪৫টি ক্রাউন ফ্রিজেন্ট ও ৬টি জেব্রাসহ ৪৭টি বিভিন্ন প্রজাতির সহস্রাধিক পশু-পাখি রয়েছে।
এখানে দেশের বন ও প্রাণী বৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিকমানের প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তথ্য ও শিক্ষাকেন্দ্র, নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম, পার্ক অফিস, বিশ্রামাগার, ডরমেটরি, বন্যপ্রাণি হাসপাতাল, কুমির পার্ক, লিজার্ড পার্ক, ফেন্সি ডাক গার্ডেন, ক্রাউন্ট ফিজেন্ট এভিয়ারি, প্যারট এভিয়ারি, ধনেশ পাখিশালা, ম্যাকাউ ল্যান্ড, মেরিন একোরিয়াম, অর্কিড হাউস, প্রজাপতি বাগান, ক্লাইমেট হাউস, ভালচার কর্নার, ঝুলন্ত সেতু, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ফোয়ারা, বাঘ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, ইকো-রিসোর্ট, ফুট কোর্ট, এলিফেন্ট শো গ্যালারি, বার্ড শো গ্যালারি, এগ ওয়ার্ল্ড ও শিশুপার্ক চালু করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর উদ্বোধনের পর থেকেই সর্ব সাধারণের জন্য সাফারি পার্ক খুলে দেয়া হয়।